শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলগুলোতে মুদ্রাস্ফীতির দোহাই দিয়ে বারবার খাবারের দাম ও আবাসিকতার ফি বাড়লেও বাড়েনি হলের সেবা ও খাবারের ন্যূনতম মান। আবাসিক হলগুলোতে নিম্নমানের খাবার, অপরিচ্ছন্নতা ও ধীরগতির ইন্টারনেট সেবা দিয়েই চলছে হল প্রশাসন। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ফি ৭১৮ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের হল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১৮০ টাকা, যা ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ফি থেকে ২৪৬২ টাকা বেশি অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৩ গুণ।
জানা গেছে, হলে থাকা শিক্ষার্থীরা পরিবহন ব্যবহার না করলেও গুনতে হচ্ছে ফি। এদিকে হলের খাবারের দাম বাড়িয়ে নতুন তালিকা ও মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ তালিকায় সব খাবারের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। তবে খরচ সাড়ে তিন গুণ বৃদ্ধি পেলেও ভর্তুকি বেড়েছে মাত্র ০.২৫ গুণ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে হলের ডাইনিংয়ে আবাসিক ক্ষার্থীপ্রতি মাসিক ভর্তুকি ছিল ৮০ টাকা। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে শিক্ষার্থীপ্রতি এই ভর্তুকি বেড়েছে ২০ টাকা অর্থাৎ ০.২৫ গুণ।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের আগে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের আবাসিক ফি ছিল ৭১৮ টাকা। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিসহ আনুষঙ্গিক ফি বাড়িয়ে প্রায় কয়েক গুণ করা হয়। আবার অন্যদিকে শিক্ষাবর্ষের আবাসিক ফি বৃদ্ধি করে ১৮৭২ টাকা করা হয়। এ ছাড়া ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আরেক ধাপে বৃদ্ধি করা হয় আবাসিক ফি। দ্বিতীয় ধাপে বৃদ্ধির পর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক ফি এখন ৩১৮০ টাকা, যা ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ফি থেকে ২৪৬২ টাকা বেশি অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৩ গুণ।
সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক একাধিক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে শিক্ষাসামগ্রী কিনতে এমনিতেই হিমসিম খাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। অথচ হল প্রশাসন ভর্তুকি না বাড়িয়ে বারবার আবাসিক শিক্ষার্থীদের খরচ বাড়িয়েছেন।
শেখ রাসেল হলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, খাবারের মান খুব খারাপ হলেও হল প্রশাসন নিজেদের ইচ্ছেমতো ডাইনিং ম্যানেজার নিয়োগ করেন। হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের থেকে কোনো মতামত গ্রহণ না করে তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী হল পরিচালনা করেন।
এই বিষয়ে একাধিক হলের ডাইনিং ম্যানেজারদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে যে দাম বাড়ানো হয়েছে, তা দিয়ে এর চেয়ে ভালো মানের খাবার পরিবেশন করা সম্ভব নয়। আমরা ভর্তুকি বৃদ্ধি করার দাবি জানাচ্ছি প্রভোস্ট স্যারের কাছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক দেবাশীষ শর্মা বলেন, ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী আবাসিক হলে ভর্তুকি দেওয়ার কোনো বিধান নেই। তবু এতদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য খাত থেকে সমন্বয় করে ভর্তুকি দেওয়া হতো। তবে বর্তমানে ইউজিসির নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তুকি বাড়ানো সম্ভব নয়, বরং ভর্তুকি আরও কমে যাবে। তিনি আরও বলেন, আমরা ডাইনিং ম্যানেজারদের নির্দেশনা দিয়েছি মানসম্মত খাবার পরিবেশন করার। এর পরও তারা অনিয়ম করলে আমরা তদারকি করে ব্যবস্থা নেব।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১০/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়