২০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য অধ্যক্ষের!

বরগুনাঃ জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় মাজহার উদ্দিন টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তিনটি নিয়োগে প্রায় ২০ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ করেছেন নিয়োগে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন ভুক্তভোগী।

নিয়োগের পূর্বে মামুন নামের এক অসহায় ব্যক্তির কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে ইসলামী ব্যাংকের দুই লাখ টাকার একটি চেকও নিজ দখলে রাখেন অভিযুক্ত ওই অধ্যক্ষ।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার মাজাহার উদ্দিন টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের নবসৃষ্ট নৈশপ্রহরী, পরিচ্ছন্ন কর্মী ও আয়া পদে গত ৫ জুন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক মুক্ত খবর ও স্থানীয় দৈনিক দ্বীপাঞ্চল পত্রিকায় জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে নৈশপ্রহরী পদে ৪ জন, পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে ৩ জন ও আয়া পদে ৭ জন আবেদন করেন। আবেদনকারী অনেকের কাছে লোক মারফত টাকা চাওয়ার কারণে পাথরঘাটার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেন। পরে নতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খানকে ভুল বুঝিয়ে নতুনভাবে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিয়োগের আগেই অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ লোক মারফত অনেক আবেদনকারীর আত্মীয়ের কাছ থেকে ব্যাংক চেক জমা রাখেন, আবার অনেক আবেদনকারীর বাড়িতে বিভিন্ন অংকের টাকা চেয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। এক আবেদনকারী আর্থিক অসচ্ছল হওয়ার কারণে তার বাড়িতে নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র পাঠাননি বলে অভিযোগ করেছেন ওই আবেদনকারীর বাবা।

কলেজে নৈশপ্রহরী পদে আবেদনকারী মো. মামুন বলেন, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ আমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমার ভাইয়ের মঠবাড়িয়া শাখার ইসলামী ব্যাংকের ৭৮৬৮৯৪৩নং চেকের মাধ্যমে দুই লাখ টাকার চেক নিয়েও আমাকে চাকরি দেয়নি। আমরা এই অধ্যক্ষের অপসারণসহ নিয়োগ স্থগিত করার দাবি করছি।

কলেজে পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে আবেদনকারী মাসুমের বাবা বাদশা মিয়া বলেন, ইত্তিজা নামে এক শিক্ষকের মাধ্যমে আমার ছেলের চাকরির জন্য চার লাখ টাকা দাবি করেন। আমার কাছে এত টাকা না থাকার কারণে আমার ছেলের নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশ পত্রই পাঠায়নি ওই অধ্যক্ষ।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাজহার উদ্দিন টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ কালবেলাকে জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সম্পূর্ণ মিথ্যা। কলেজে এখনো কোনো নিয়োগ হয়নি। ইউএনও স্যার যদি অনুমোদন দেন তাহলে নিয়োগ হবে। অনুমোদন না দিলে নিয়োগ বাতিল হবে। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ সময় নিয়ে লিখেন এবং আরও একটু জেনে শুনে লিখেন। তা ছাড়া আপনারা পাথরঘাটা ইউনও স্যারকে জিজ্ঞেস করলে সব জানতে পারবেন।

মাজাহার উদ্দিন টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের সভাপতি ও পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, ফেয়ার পরীক্ষার মাধ্যমেই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। তবে টাকা লেনদেনের কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৫/১০/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়