বরিশালঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শেরেবাংলা হলের ক্যান্টিন বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পরিচালক সুমন ও তার কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্যান্টিন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাতের খাবার পরিবেশনের পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই খোঁজ মিলছে না সুমন ও তার কর্মচারীদের। এ মাসের শুরু থেকে তারা হলের ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্ব নেন।
পরিচালক ও তার সহকারীদের পলায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ক্যান্টিনের দায়িত্বরত বাবুর্চি বেলাল।
বাবুর্চি বেলাল জানান, হলের ক্যান্টিন চালাতে গিয়ে লোকসান ও ঋণের সম্মুখীন হন সুমন। বৃহস্পতিবার মাসের শেষ দিন, ক্যান্টিনে আয়-ব্যয়ের হিসাব করা হবে, যথাযথ হিসাব দিতে পারবেন না বলে এবং ক্যান্টিনের গ্যাস মালিকদের ও অন্যদের টাকা পরিশোধ করার চাপ সহ্য করতে না পেরেই তিনি (পরিচালক) ও তার লোকেরা পালিয়েছেন।
আজ ক্যান্টিন চলবে কি না- জানতে চাইলে বেলাল বলেন, ‘সুমন ও তার লোকেরা পালিয়ে যাওয়ার কারণে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় রান্নার জন্য তরকারি ও গ্যাস কেনা সম্ভব নয়। ফলে মুহূর্তে রান্নার কাজে হাত দিতে পারছি না। আপাতত ক্যান্টিন বন্ধ থাকবে।’
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন বলেন, ‘ঘুম থেকে ওঠার পর ক্যান্টিনে গিয়ে দেখি, পরিচালক ও তার লোকেরা পালানোয় ক্যান্টিন বন্ধ। এমতাবস্থায় আমাদের অন্য হলের ক্যান্টিন ও বাইরের হোটেল থেকে খাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। হঠাৎ উদ্ভূত এ ভোগান্তি দূর করার জন্য কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের চার থেকে পাঁচজন আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের হলের ক্যান্টিনে খাবার সমস্যা দীর্ঘদিনের। নতুন পরিচালক এসে খাবারের মান কিছুটা ভালো করেছিলেন, কিন্তু এর আগের পরিচালক ও বর্তমান বাবুর্চি বেলাল গ্যাস, মুদি, সবজি ও মাছসহ বিভিন্ন দোকানে হাজার হাজার টাকার ঋণ। ওই সব দোকানিরা টাকার জন্য তাগাদা দিতে আসতেন। এতে নতুন পরিচালকের সঙ্গে ঝামেলা হতো আগের পরিচালক বেলালের। পুরাতন মালিক বেলাল পরিচালনার দায়িত্ব নামে ছাড়লেও সে-ই এখনো পরিচালক। পুরাতন পরিচালকের ধার-দেনার চাপেই নতুন পরিচালক চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বেলালকে ক্যান্টিন থেকে বিতাড়িত করা ছাড়া এ সমস্যা সমাধান হবে না।’
আগের পরিচালক বেলালের (বর্তমান বাবুর্চি) কাছে তার ধার-দেনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ধার-দেনা আমি শোধ করব, অনেকটা শোধ করেও দিয়েছি। বাকি যা আছে, আস্তে আস্তে শোধ করব। নতুন যারা এসেছিলেন আমার ধারদেনার সঙ্গে তাদের কোনো কারবার নেই। তারা নিজেরাই নতুন দেনা করে পালিয়ে গেছেন। আমার বেতন পর্যন্ত দিয়ে যাননি তারা।’
শেরেবাংলা হলের নতুন ক্যান্টিন পরিচালক সুমনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কেটে দেন। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠালে তাতেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট আবু জাফর মিয়া বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে দ্রুতই বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০১/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়