স্কুল ফিডিং বন্ধের নেতিবাচক প্রভাব: প্রাথমিকে কমেছে শিক্ষার্থী উপস্থিতি

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে

সুনামগঞ্জঃ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ফিডিং প্রকল্পের আওতায় দেশের দারিদ্র্যপীড়িত ৩৫টি জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩১ লাখ ৬০ হাজার শিশুকে প্রতিদিন টিফিন হিসেবে বিস্কুট খেতে দেয়া হতো। দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় খুদে শিক্ষার্থীদের পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করতে ২০১০ সালে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালু করে সরকার। শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমানোসহ বেশ কিছু উদ্দেশ্য ছিল এ কার্যক্রমের। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডাব্লিউএফপি) ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ সহায়তায় পরিচালিত এই প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। কিন্তু গত জুন মাসের পর থেকে এ কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। স্কুল ফিডিং কার্যক্রম বন্ধের প্রভাব পড়েছে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায়। উপজেলার প্রায় সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমেছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। দ্রুত স্কুল ফিডিং কার্যক্রম শুরু করা না হলে পুরো সময়ে শিক্ষার্থী ধরে রাখা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।

শিশু স্কুলে যেতে না চাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। তাদের মতে, স্কুল ফিডিং কার্যক্রম শুরু না হলে এত সমস্যা হতো না। কিন্তু শুরু করে এখন বন্ধ হওয়ায় স্কুলগামী শিশুদের কোমল মনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বেশিরভাগ শিশু বিস্কুট ছাড়া স্কুুলে যেতে চায় না।

জানা গেছে, মধ্যনগর উপজেলায় শিক্ষার হার ২৩.০২ শতাংশ। এখানে ৮৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একটি কলেজ রয়েছে। উপজেলার ঢুলপুষি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীউল কিবরিয়া তালুদার বলেন, আমাদের হাওরাঞ্চলের মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। ভৌগোলিক কারনে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে শিশুদের স্কুলমুখী করা কষ্টসাধ্য। এর মধ্যে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার কমে গেছে। তাই সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অচিরেই যাতে স্কুুল ফিডিং কর্মসূচি আবার চালু করা হয়।
বংশীকুন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলে, আমরা আগে বিদ্যালয়ে এলে টিফিনে আমাদের বিস্কুট দেয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে আমরা এখন আর বিস্কুট পাচ্ছি না। যার ফলে আমাদের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসতে চায় না।

একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. রমজান মিয়া বলেন, আগে বিস্কুটের জন্য শিশুরা স্কুলে নিয়মিত যেত। এখন বিস্কুট না দেয়ায় স্কুলে যেতেই চায় না। আমি আমার ছেলেকে বিস্কুট কিনে দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে পাঠাই।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস বলেন, দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চলে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় প্রতিদিন টিফিনে বিস্কুট বিতরণ প্রকল্পটি বন্ধ রয়েছে। প্রকল্পটি আগামী নভেম্বর মাস থেকে পুনরায় চালু হওয়ার কথা থাকলেও সম্ভবত আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে চালু হতে পারে। চালু হলে আবার বিস্কুট বিতরণ শুরু হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/১০/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়