নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অক্সফোর্ড হাইস্কুলের ২০ ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ২ স্কুলশিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিয়েছে র্যাব-১১। গতকাল শনিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবীরের আদালতে শুনানি শেষে শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে ২ মামলায় ৬ দিন এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারের ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এর আগে আরিফকে ২ মামলায় ১০ দিন এবং জুলফিকারকে এক মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠায় র্যাব। রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ওসি হাবিবুর রহমান।
আদালত শুনানি শেষে আরিফুল ইসলামকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ৩ দিন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৩ দিন করে মোট ৬ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকাবাসীর রোষানল থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে উদ্ধার করে র্যাব। পরে শুক্রবার বিকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন স্কুলের নির্যাতিত সব ছাত্রীর অভিভাবকরা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপর মামলাটি দায়ের করে র্যাব।
র্যাব-১১ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন জানান, আমরা দুই আসামির একজনের ১০ দিন ও অপরজনের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলাম। আদালত শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে ৬ দিন ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে একদিনের রিমান্ড দিয়েছেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরো জানান, শিক্ষক আশরাফুল আরিফের মোবাইলফোন ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিভাইস জব্দ করে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত শিক্ষকও বিষয়টি স্বীকার করেছে। শুধু তাই নয়, প্রধান অভিযুক্ত শিক্ষক আরিফুল ইসলাম এমন কিছু তথ্য দিয়েছে যা ভয়াবহ ও লোমহর্ষক। তদন্তের স্বার্থে যা প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মিজিমিজি কান্দাপাড়া মাদ্রাসা রোড এলাকায় অবস্থিত অক্সফোর্ড হাইস্কুলের ওই শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকে আটক করে এলাকাবাসী গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ ও র্যাব গিয়ে তাদের আটক করে নিয়ে যায়। পরে র্যাব অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত শুরু করে।