হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালিত হবে সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও হয়ে গেছে। আর এর নেপথ্যে কাজ করছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. এম. শাহ্ নওয়াজ আলি। মূলত তার উদ্যোগেই দিল্লীতে অবস্থিত সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর শততম বর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি তিনি নিজেই গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে প্রফেসর ড. এম. শাহ্ নওয়াজ আলি বলেন, অন্যদের আগ্রহ থাকলেও পাকিস্থানের অনীহা ছিল। ছিল স্বভাবসুলভ অনাগ্রহ, বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ নিয়ে। তাদের কথা, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সেতো আপনাদের দেশের বিষয়। কিন্তু আমি বোঝাতে চেয়েছি, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের বিষয় নয়। তিনি বিশ্ব নেতা। তাকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী পঠন-পাঠন হওয়া প্রয়োজন। জানা প্রয়োজন তার জীবন আর সংগ্রাম, বাঙালি জাতি গঠনের ইতিহাস।
সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্সিয়াল এক্সপার্ট কমিটির এই সদস্য জানান, দিল্লীতে অবস্থিত সার্ক বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে বর্ণাঢ্য আয়োজন হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমি প্রস্তাবটি উত্থাপন করি।
অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে প্রফেসর আলি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যেকোনো মূল মিটিং এর আগে একটা প্রি-ডিসকাসন মিটিং হয়। সেখানের আলোচ্যসূচিতে আমি সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের বিষয়টি নিয়ে আসতে চাইলাম। অনেকের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে আলোচনাও করলাম। শ্রীলঙ্কা শুরুতেই খুব আগ্রহ দেখাল। পাকিস্তান অনেকটা অসম্মত। বাকি সবাই বললো, আপনি মূল মির্টিং-এ প্রস্তাব উত্থাপন করুন। আমি সেভাবেই তৈরি হলাম।
মূল মিটিং সম্পর্কে তিনি বলেন, এখানে শিক্ষার্থীদের নানান বিষয়ে আলোচনা হলো। আটটি দেশের সমন্বয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গবন্ধুর মতো একজন মহামানবের জীবন ও সংগ্রাম তরুণ শিক্ষার্থীরা জানুক এবং বিশ্বময় তা ছড়িয়ে দিক, এমন একটি মনোবাসনা আমার ভেতরে ভেতরে ছিল অনেক দিন। আমি বললাম, বাংলা ভাষা থেকে শুরু করে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন সবটাতেই যে মানুষটির অসামন্য অবদান, তার নাম শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের জন্য এক সংগ্রামী মহানায়কের উদাহরণ। যিনি মানুষকে মুক্তি দিতে পেরেছেন। তার জন্মশতবার্ষিকী বিশ্বের অনেক জায়গার মতো সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়েও পালিত হওয়া উচিত। আর আজকের যে উন্নত বাংলাদেশ তার সবটুকু অর্জনতো তারই।
এই আলোচনা ও প্রস্তাবনায় পরবর্তীতে সকল দেশের প্রতিনিধিরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে আগ্রহ ও সম্মতি প্রকাশ করে।
ড. এম. শাহ নওয়াজ আলি আরও জানান, এ উপলক্ষে বাংলাদেশ সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ ও কালচারাল প্রোগ্রাম আয়োজন করবে এবং এর ব্যয়ভার বাংলাদেশ সরকার বহন করবে বলেও তিনি জানান। পাশাপাশি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত সচিব ও সার্ক ডেস্কের দায়িত্বে কর্মরত শামসুল আলমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ড. এম. শাহ্ নওয়াজ আলি।