সভাপতি হতে মাদ্রাসা সুপারকে আটকে রেখে নির্যাতন মেয়রের

পাবনাঃ দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে পাবনার সাঁথিয়ায় আব্দুল বারি নামে এক মাদ্রাসা সুপারকে পৌর মেয়রের কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন ও অকথ্য ভাষায় গালাগালের অভিযোগ উঠেছে। ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে মাদ্রাসা সুপারকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র মাহবুবুল হক বাচ্চুর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

পাবনা সদরের ভাঙ্গাবাড়িয়ার আব্দুল গফুর জোয়ার্দারের ছেলে আব্দুল বারি সাঁথিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার। জানা গেছে, সাঁথিয়া

পৌরসভাধীন বালিকা দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের জন্য প্রাথমিকভাবে একটি অ্যাডহক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপির ছেলে, বেড়া পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট আশিফ শামস রঞ্জন সাঁথিয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা খোকনকে অ্যাডহক কমিটিতে সভাপতি মনোনয়ন দিতে বলেন। অন্যদিকে সাঁথিয়া পৌর মেয়র মাহবুবুল হক বাচ্চু ম্যানেজিং কমিটির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য জোর তদবির চালায়। এ নিয়ে এক বছর ধরে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিরোধ চলছে।

গতকাল সকালে সাঁথিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় পৌরসভার কর্মচারীকে পাঠিয়ে মাদ্রাসার সুপারকে মেয়রের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসা হয়। মেয়র তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এরপর পাশের রুমে নিয়ে মেয়রের সহযোগী সাদ্দাম ও বিষু সুপার আ. বারীকে মারধর করে। এ সময় সেখানে মাদ্রাসার অফিস সহকারী মোক্তার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি সাঁথিয়া থানায় ফোন করেন। পরে পুলিশ এসে মাদ্রাসার সুপার আব্দুল বারিকে উদ্ধার করে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আব্দুল বারি বলেন, মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের জন্য অ্যাডহক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এমপির ছেলে ও বেড়া পৌর মেয়র সাঁথিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা খোকনকে সভাপতি করার কথা বলেন। আমরা নিয়মের মধ্য থেকে অ্যাডহক কমিটি গঠনের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু মেয়র সভাপতি হওয়ার জন্য আমাকে ডেকে নিয়ে গালাগাল ও নির্যাতন করেন। এর আগে গত ৬ জুলাই পৌর মেয়র তার কক্ষে ডেকে আমাকে লাঞ্ছিত করেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন তিনি। এ ছাড়া শিগগির এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র মাহবুবুল বলেন, এসব ঘটনা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সকাল ১০টায় আমি ইউএনও অফিসে ছিলাম। আমাকে যারা দেখতে পারে না, তারা আমার বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদ আলম বলেন, মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে আগে থেকেই তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ আব্দুল বারিকে উদ্ধার করে। তবে এর মধ্যে অন্য কোনো ঘটনা বা অন্য কিছু আছে কি না সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় এসপি আমাদের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৯/২০২৩

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়