শেরপুরে ছুটি ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণে মাদরাসা সুপার

বগুড়াঃ ছুটি ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণের অভিযোগ উঠেছে জেলার শেরপুর উপজেলার আমিনপুর শহীদ মিজানিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আবু সাঈদ সরকারের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট কারও অনুমতি না নিয়েই গত ৩১ আগস্ট থেকে ভারতে অবস্থান করছেন তিনি। এমনকি বিদেশ ভ্রমণ শেষে কবে নাগাদ মাদরাসা সুপার দেশে ফিরবেন তাও জানা নেই কারও।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে সুপার আবু সাঈদের বিরুদ্ধে। মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বেশকয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী এসব অভিযোগ জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাদরাসার সুপার মাওলানা আবু সাঈদের কক্ষ খোলা থাকলেও অনুপস্থিত তিনি। তার চেয়ারও ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এসময় জানতে চাইলে শিক্ষক-কর্মচারীরা জানান, সুপারের ব্যক্তিগত ফোন বন্ধ। তাই কোথায় আছেন সঠিক করে বলতে পারছেন না। তবে তারা শুনেছেন তিনি ভারত ভ্রমণে গেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আমিনপুর শহীদ মিজানিয়া দাখিল মাদরাসার নামে অন্তত ২০ বিঘা জমি রয়েছে। এরমধ্যে তিন বিঘা জমি ইটভাটার মধ্যে পড়েছে। তাই সাড়ে পাঁচ লাখ টাকায় জমিগুলো লিজ দেওয়া হয়। কিন্তু এসব টাকার কোনো হদিস নেই। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকাগুলো নিজের কাছে রেখে দেন এবং পরবর্তীতে ভুয়া ভাউচার তৈরির মাধ্যমে তা আত্মসাৎ করেন আবু সাঈদ সরকার। এমনকি মাদরাসা পরিচালনা কমিটির একাধিক সদস্যকে না জানিয়ে কাগজে-কলমে গোপন মিটিং দেখিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের পাঁয়তারা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগে বলা হয়।

সুপার ছুটি না নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মীর্জা মালেক বলেন, কাউকে কিছু না জানিয়ে কোনো প্রকার ছুটি ছাড়াই মাদরাসা সুপার ভারত ভ্রমণে গেছেন। এটি নিয়ম-শৃঙ্খলার চরম পরিপন্থি। এছাড়া মাদরাসার টাকা আত্মসাতসহ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তদন্তে কমিটি করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর সেই অনুযায়ী অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ছুটি ছাড়া শিক্ষকদের বিদেশ ভ্রমণের কোনো সুযোগ নেই। উনি ছুটি নিয়েছেন কি না এ বিষয়ে খতিয়ে দেখতে হবে। এমনটি হয়ে থাকলে ওই মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে ওই মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ এখনো হাতে পাননি দাবি করে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাতসহ অনিয়ম-দুর্নীতি করে কেউ পার পাবে না।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, অসুস্থতার কারণে বাসায় অবস্থান করছি। তাই অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, অভিযুক্ত মাদরাসা সুপার মাওলানা আবু সাঈদ সরকারের বক্তব্য জানতে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়া বিদেশে অবস্থান করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৫/০৯/২০২৩     

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়