শিক্ষিকা ফৌজিয়া আলম বাবলির শ্লীলতাহানির মামলায় অধ্যক্ষ কারাগারে

নিউজ ডেস্ক।।

এক নারী প্রশিক্ষণার্থীর (স্কুল শিক্ষিকা ফৌজিয়া আলম বাবলি ) শ্লীলতাহানির মামলায় পাবনার সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের (টিটিসি) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা সুজাউদ্দৌলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কলেজের গেষ্ট হাউসে অবস্থানকালে অন্য শিক্ষার্থীরা ঘরে তালা দিয়ে পুলিশে খবর দেয়। এ নিয়ে উত্তেজনার এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ এবং শিক্ষিকা ফৌজিয়া আলম বাবলি কে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসে পাবনা থানা পুলিশ।

এরপর শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত শিক্ষিকা ফৌজিয়া আলম বাবলি  এবং অধ্যক্ষ নিজেদেরকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।

এসময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন অভিযোগ না দিলে গোলক ধাঁধায় পড়ে পুলিশ। পরে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞসাবাদে ঘটনার মোড় পালটে যায়।

শুক্রবার বিকালে শিক্ষিকা ফৌজিয়া আলম বাবলি অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ তাকে প্রায়ই উত্যক্ত করতেন এবং এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে তিনি তাকে গেষ্ট হাউসে অধ্যক্ষের কক্ষে আসতে বললে তার শ্লীলতাহানি করা হয়।

পরে শিক্ষিকা ফৌজিয়া আলম বাবলি অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পাবনা থানায় শ্লীলতাহানির মামলা করলে পুলিশ অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার দেখায়। এসময় শিক্ষিকা ফৌজিয়া আলম বাবলি কে ছেড়ে দেয়া হয়।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, পাবনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের (টিটিসি) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা সুজাউদ্দৌলাকে শিক্ষিকা ফৌজিয়া আলম বাবলির সঙ্গে রাতে অবস্থান করার সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় তারা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল বলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

একাধিক প্রত্যক্ষ্যদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, গত দুই বছর ধরে বিএড উন্মুক্ত কোর্সের শিক্ষার্থী শিক্ষিকা ফৌজিয়া আলম বাবলি সিরাজগঞ্জ থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার এসে দুই দিন কলেজের ছাত্রী হোস্টেলে অবস্থান করে। মাঝে মধ্যেই ওই শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের কক্ষে রাতে অবস্থান করতেন। বিষয়টি নিয়ে আবাসিক শিক্ষার্থীরা চরম বিব্রত ও ক্ষুব্ধ ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে শিক্ষার্থীরা তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে পাশ্ববর্তী পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীরাও কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো হয়।

বিকালে পাবনা থানার ওসি ওবাইদুল হক এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওই শিক্ষার্থী এবং অধ্যক্ষের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক আছে বলে পুলিশ জানতে পারে। বিকালে থানায় এসে দুজনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা এই সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। বাবলী অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করলে পুলিশ অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার দেখান। রাত ৮টা পর্যন্ত অধ্যক্ষ সুজাউদ্দৌলা থানায় ছিলেন।

এদিকে অধ্যক্ষ সুজাউদ্দৌলা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তার কিছু ভুল ছিল। তবে তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি ষড়যন্ত্র।