শিক্ষার্থী সঙ্কটে বেসরকারি বিদ্যালয় আসন খালি থাকবে ৭ লাখের বেশি

নিউজ ডেস্ক।।

লটারিতে ভর্তির জন্য অনলাইন আবেদনেও সাড়া পায়নি বেসরকারি বিদ্যালয়। অধিকাংশ অভিভাবক চান তাদের সন্তানকে সরকারি স্কুলে ভর্তি করাতে। ফলে আগামী শিক্ষাবর্ষে সরকারি স্কুলের আসনের তুলনায় আবেদন পাঁচগুণ বেশি জমা পড়লেও বেসরকারি স্কুলের আসন খালি থাকবে সাত লাখের বেশি।

গত কয়েক বছর ধরেই মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। শিক্ষার্থীদের লটারির মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রদান করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা সরকারি স্কুলে আবেদন করে থাকে। গুটি কয়েক বেসরকারি স্কুল শিক্ষার্থী পেলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী সঙ্কটে ভোগে। এ বছর বেসরকারি স্কুলগুলোতে ১০ লাখ শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে মাত্র দুই লাখ ৩৮ হাজার। ফলে ফাঁকা থাকবে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি।

সূত্রমতে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আগে দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোর কাছে শূন্য আসনের তথ্য চায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। সে আলোকেই ভর্তির জন্য আবেদন চাওয়া হয়। গত ২৪ অক্টোবর বিভিন্ন স্কুলে ভর্তির জন্য প্রথম থেকে নবম শ্রেণীতে অনলাইনে ভর্তি আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। ১৪ নভেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর জানিয়েছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের বেসরকারি তিন হাজার ১৮৮ প্রতিষ্ঠানে আসন শূন্য রয়েছে ১০ লাখ চার হাজার। কিন্তু এসব আসনে ভর্তির জন্য আবেদন পড়েছে মাত্র দুই লাখ ৩৮ হাজার। সব শিক্ষার্থী ভর্তির পরও এসব প্রতিষ্ঠানে সাত লাখ ৭৬ হাজার আবেদন শূন্য থাকবে।

এদিকে মাউশি কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আবেদনেই বলে দিচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থান। এ ছাড়া শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বেড়েছে। কোনো দিক বিবেচনা না করে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেয়ার ফলেও এমন হতে পারে বলে তাদের অভিমত।

প্রতিষ্ঠানগুলো যে তথ্য মাউশিতে পাঠিয়েছে, সে অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা ১১ লাখ ২২ হাজার ৯৯টি। এর মধ্যে সরকারি স্কুলে শূন্য আসন এক লাখ ১৮ হাজার ১০৬টি। আবেদন জমা পড়েছে প্রায় চার লাখ ৯০ হাজার।

সারা দেশের সরকারি ৬৫৮টি স্কুল এই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে। এর মধ্যে ঢাকা শহরে প্রতিষ্ঠান ৪১টি। মাউশির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজধানীর নামি-দামি কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য স্কুলে আসনের বিপরীতে এখনো শিক্ষার্থী সঙ্কট রয়েছে। অনেক স্কুলে নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়েও শিক্ষার্থী ভর্তি নিচ্ছে। আর জেলা পর্যায়ের পরিস্থিতি আরো খারাপ। সরকারি বিদ্যালয়গুলো ছাড়া অনেক স্কুলে আগামী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী পাবে হাতেগোনা। এসব প্রতিষ্ঠান বেশির ভাগই এমপিওভুক্ত।

গত বছরের ভর্তির তথ্য বলছে, ৯ লাখ ৪০ হাজার ৮০৭টি শূন্য আসনের বিপরীতে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছিল দুই লাখ ৭৬ হাজার ৬৪১ জন শিক্ষার্থী। ফাঁকা ছিল ছয় লাখ ৬৪ হাজার ১৬৬টি আসন। সেই হিসাবে বাকি ৭০ ভাগ আসন প্রার্থীর শিক্ষার্থী শূন্য ছিল। বেসরকারি কয়েকটি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় ২০২১ সালে প্রথম বারের মতো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।

আগামী ২৬ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে লটারির ফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) উপ-পরিচালক এবং ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২২/১১/২০২৩ 

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়