শিক্ষার্থী ৮ জন হলেও শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ২৪ জন

রাজশাহীঃ জেলার দুর্গাপুরে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা বেশি। উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের নান্দিগ্রাম দারুস -সালাম আলিম মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী আটজন হলেও শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ২৪ জন। বছরের বেশির ভাগ সময়ই হয় না ক্লাস, নেই নতুন শিক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানায়, শিক্ষার্থী নিয়ে শিক্ষক বা ম্যানেজিং কমিটির কোনো মাথাব্যথা নেই। তবে শিক্ষক -কর্মচারীরা নিয়মিত তুলছেন বেতন ভাতা। প্রধান শিক্ষক প্রভাবশালী ও স্থানীয় নেতা হওয়ায় ঠিকমতো স্কুলে আসেন না। নিয়োগ দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নান্দিগ্রাম দারুস-সালাম আলিম মাদ্রাসাটি ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পরে ১৯৮৬ সালে এমপিও ভুক্ত হয়। তবে বিগত দিনে ঠিকমতো মাদ্রাসাটি চললেও বর্তমানে প্রতিষ্ঠান অবস্থা আগের মতো নেই। স্কুলটিতে মোট শিক্ষার্থী ৮ জন, শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ২৪ জন।

এর মধ্যে অধ্যক্ষ , সহকারী শিক্ষক ১২জন, অফিস সহকারী চারজন ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ৬জন সদ্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে ২ জন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণিতে দুইজন, সপ্তম শ্রেণিতে তিনজন অষ্টম শ্রেণিতে দুজন এবং নবম শ্রেণীতে একজন।

মাদ্রাসাটিতে নেই কোনো সাইনবোর্ড। তবে শিক্ষার্থী কম হওয়ার কারণ হিসেবে স্থানীয় রাজনীতি ও ম্যানেজিং কমিটির জটিলতাকেই দায়ী করছেন অধ্যক্ষ আবু মুসা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আজাদ রহমান বলেন, শুধুমাত্র অধ্যক্ষের কারণে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চোখের সামনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ইতোমধ্যে অনেক স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। উপজেলার চেয়ারম্যান, সাবেক ইউএনও’র বিরুদ্ধে পর্যন্ত মামলা করেছে এই অধ্যক্ষ। মাদ্রাসায় শুরুর দিকে অনেক ছাত্রছাত্রী ছিল অধ্যক্ষ আবু মুসা প্রতিষ্ঠান তার ইচ্ছামতো পরিচালনা করেন।

আজমত আলী নামের মাদ্রাসার এক সাবেক ছাত্র বলেন, এখানে আমি পড়াশোনা করেছি আমাদের সময় অনেক শিক্ষার্থী ছিলো। কিন্তু এখন এই মাদ্রাসার বেহলঅবস্থা। এখানে প্রায় ৮ জনের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শনে আসলে অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থী এনে দেখানো হয় । এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের জন্য এলাকাবাসী তাদের ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় ভর্তি করে না।

মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম প্রতিবেদকে বলেন, বর্তমানে ২৪ জনের মতো শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে। খাতা কলমে যে কয়জন শিক্ষার্থী আছে। তারা মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় এসে উপস্থিত খাতায় স্বাক্ষর করে যায়। নিয়মিত শিক্ষার্থীর উপস্থিতি মাত্র সাত হতে আট জনের বেশি হবে না।

অধ্যক্ষ আবু মুসা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তিনি কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি করেন না। কিছু সমস্যার কারণে হয়তো এলাকার লোক তাদের সন্তানকে মাদ্রাসায় দিতে চান না।’ তাই শিক্ষার্থী কম।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহিদুর হক মুঠোফোনে বলেন, ‘জানতাম প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী কম। তবে এত কম সেটা জানা ছিল না।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল করিম বলেন,অভিযোগ পেয়েছি ‘ এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/৩১/১০/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়