শিক্ষার্থীদের মনে নজরদারি চালাতে প্রতিদিন ডায়রি রাখবে স্কুল

ছাত্রদের মানসিক অবস্থা জানতে স্কুলের ডায়েরিতে বাড়তি কলাম রাখা হবে। আর এই নিয়ম কার্যকর করতে স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে প্রস্তাব পাঠাবে আয়োগ নামের একটি শিশু অধিকার সুরক্ষা সংস্থা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এমনটাই ঘটতে যাচ্ছে।

জানা গেছে, স্কুলের ডায়েরিতে অতিরিক্ত একটি কলাম থাকবে যেখানে অভিভাবকদের ছাত্রদের মানসিক অবস্থার বিবরণ লিখতে হবে।

এ বিষয়ে শিশু সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলছেন, আমরা এরকম একটি ব্যবস্থা চালু করার জন্য ভেবেছি। এ জন্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে দ্রুত প্রস্তাব পাঠাবো। সব সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলেই এই ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য বলা হবে। স্কুলের ডায়েরিতে ছাত্রের নাম, ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ, ইমার্জেন্সি ফোন নম্বর, বিশেষ কোনও অসুখ আছে কি-না জানানোর জন্য বিভিন্ন কলাম থাকে। সেখানেই ছাত্রের ডিপ্রেশন, সিজোফ্রেনিয়া বা অন্য কোনো মানসিক অসুখ রয়েছে কি-না তা জানানোর জন্য অতিরিক্ত একটি কলাম রাখার ব্যবস্থা হলে শিক্ষকদেরও সুবিধা হবে। তাঁরা সেই ছাত্রের দিকে বিশেষ নজর দিতে পারবেন।

তিনি বলেন, এর ফলে জি ডি বিড়লার ওই ছাত্রীর মতো দুঃখজনক ঘটনা এড়ানো যাবে বলে আমার মনে হয়। আগে থেকে জি ডি বিড়লা স্কুলের ওই ছাত্রী হতাশায় ভুগছিল। অথচ ওর অভিভাবক স্কুলে কিছু জানাননি। স্কুল জানলে হয়তো এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক যেকোনো কারণেই ছাত্ররা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। বাবা–মায়ের সমস্যার জন্য সন্তানদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে চলে যাচ্ছে। কিন্তু

জি কর মেডিক্যাল কলেজের সাইক্রিয়াট্রি বিভাগের প্রধান ডাঃ দিলীপ মণ্ডল জানান, শারীরিক সমস্যা যেমন সরাসরি বলে থাকেন অনেকে, কিন্তু নিজের সন্তানের মানসিক কোনও অসুখ রয়েছে কি-না তা জানাতে অধিকাংশ মা-বাবাই কুণ্ঠা বোধ করেন।

তিনি বলেন, এই উদ্যোগকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আমি চিন্তিত কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে। কারণ সন্তানের মানসিক সমস্যার কথা জানানো নিয়ে বাবা–মায়েদের মনে একটা জড়তা কাজ করে। শিক্ষকরাও জানার পর ওই ছাত্রের প্রতি অবহেলা করতে পারেন এরকম ধারণাও হতে পারে অভিভাবকদের। মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ থাকলে তা দোষের মনে না করে সচেতন হয়ে মোকাবেলা করা দরকার।