শিক্ষক মশিউর রহমান, ক্লাস নেন বাকী বিল্লাহ

জামালপুরঃ মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ মশিউর রহমান, কিন্তু তিনি মাদ্রাসায় যান না। তার জায়গায় নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন বাকী বিল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। আর মাস শেষে বেতন তোলেন মশিউর এবং বাকী বিল্লাহকে এর কিছু অংশ দেন। এমন ঘটনা ঘটেছে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সভার চর দারুচ্ছুন্নাত দাখিল মাদ্রাসাতে।

সরজমিনে ঘটনার সত্যতা জানতে গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে মাদ্রাসায় গিয়ে মশিউর রহমানকে পাওয়া যায়নি। আর সাংবাদিকের উপস্থিতি দেখে ছটকে পড়েন বদলি শিক্ষক বাকী বিল্লাহ।

অভিযুক্ত মোঃ মশিউর রহমান গোয়ালেরচর ইউনিয়নের আকন্দপাড়া গ্রামের মৃত মুছা আকন্দের সন্তান এবং গোয়ালেরচর আকন্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। বদলি শিক্ষক বাকী বিল্লাহ একই গ্রামের সন্তান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেই গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘মশিউর রহমান দীর্ঘদিন যাবত মাদ্রাসায় ক্লাস না। তিনি শুধু বসে বসে বেতন নেন এবং বাকী বিল্লাহকে মাসে কিছু টাকা দেন। আর সময় করে একদিন মাদ্রাসায় গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আসেন। মাদ্রাসায় যদি বাহিরের কেউ আসেন তাহলে বাকী বিল্লাহ নিজেকে মশিউর রহমান বলে পরিচয় দেন।’

বদলি শিক্ষক বাকী বিল্লাহ মোবাইল ফোনে জানান, ‘২০২২ সাল থেকে তিনি বদলি শিক্ষক হিসেবে মাদ্রাসায় ক্লাস নিচ্ছেন। প্রতি মাসে মোঃ মশিউর রহমান তাকে কিছু টাকা সম্মানী হিসেবে দেন। তার বাড়ি মাদ্রাসার কাছে হওয়ায় এবং তার কোনো কাজ না থাকায় মাদ্রাসায় ক্লাস নেন’।

তবে এই কাজটি নিয়মের মধ্যে পড়ে কিনা এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে মোবাইল ফোন কেটে দেন বাকী বিল্লাহ।

অভিযুক্ত শিক্ষক মো: মশিউর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, ‘আমার গ্রামে কয়েকজন শত্রু আছে। যারা আমার নামে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়ে থাকে। আমি যে মাদ্রাসায় ক্লাস নেই না বিষয়টি এমন না। যেদিন আমার কাজ থাকে সেই দিন বাকী বিল্লাহ ক্লাস নেয়। এই কাজটি অনেক দিন থেকে হয়ে আসছে।’

এই বিষয়ে জানতে মাদ্রাসাটির সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ মোশাররফ হোসাইনের সাথে দেখা করতে ৭ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসায় গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

তবে মাদ্রাসাটির সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘মোঃ মশিউর রহমান এই মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্র ছিলো। এরপর শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তবে তিনি ক্লাসে খুব কম আসেন। তার বদলি শিক্ষক বাকী বিল্লাহ মূলত ক্লাস নেন। আমরা এতটুকু জানি।’

বদলি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়া নিয়মের মধ্যে পড়ে কিনা এমন প্রশ্নে জবাবে মোঃ মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘এই বিষয়টি সুপারিনটেনডেন্ট সাহেব বলতে পারবেন। আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।’

এসব বিষয়ে ইসলামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এই বিষয়টি আমি জানি না। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১০/০৯/২০২৩     

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়