শিক্ষকের ভুলে পরীক্ষা দিতে পারলেন না মুন্নি

শিক্ষককে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে অব্যাহতি

মানিকগঞ্জঃ জেলার সাটুরিয়ায় এইচএসসির পৌরবিজ্ঞান ও সুশাসন বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি মুন্নি আক্তার নামে এক পরীক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষার্থীর অভিযোগ, পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব ও শিক্ষকের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে সে পরীক্ষা দিতে পারেনি। এ ঘটনায় সাটুরিয়া সৈয়দ কালু শাহ্‌ কলেজের প্রভাষক মো. ফিরোজুল ইসলামকে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. রমজান আলী জানান, পরীক্ষার্থী মুন্নি আক্তার দরগ্রাম সরকারি ভিকু মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের ছাত্রী। মোটরসাইকেলে সাটুরিয়া সৈয়দ কালু শাহ্‌ কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে আসছিল সে। পথে দ্বিমুখা নামক স্থানে পৌঁছালে ওড়না মোটরসাইকেলে জড়িয়ে রাস্তায় পড়ে যায় সে। এতে মাথায় গুরুতর আঘাত পায়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীকে অটোরিকশায় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটের সামনে আনা হয়।

এ সময় গেটে অবস্থান করা প্রভাষক মো. ফিরোজুল ইসলাম তাকে কেন্দ্রে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসার পরামর্শ দেন। সাটুরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে ১০টা ৪৭ মিনিটে মুন্নি আক্তারকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে আসেন স্বজনরা। এ সময় এমসিকিউ পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। পরে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের সৃজনশীল পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি সে।

মুন্নি আক্তার বলে, পরীক্ষা কেন্দ্রে একজন চিকিৎসক থাকতেও আমাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত করেছেন ওই শিক্ষক। তার দাবি, কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতাল বা কেন্দ্রের যে কোনো এক রুমে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। কিন্তু তারা তা না করে হাসপাতালে পাঠিয়ে তাকে পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত করেছেন। পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারায় সে কান্নায় ভেঙে পড়ে।

প্রভাষক ফিরোজুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষার্থী গুরুতর আঘাত নিয়ে কেন্দ্রের গেটে আসে। তখন তার মাথা ও হাত দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এ কারণে তাকে আমি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কেন্দ্রে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু সে ৩০ মিনিটের এমসিকিউর পরীক্ষার সময় অতিবাহিত করে কেন্দ্রে আসায় তার পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে সাটুরিয়া সৈয়দ কালু শাহ্‌ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব গণেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ঘটনাটি জানার পর আমি ইউএনওকে জানিয়েছি। শিক্ষা বোর্ডকে বিষয়টি অবহিত করেছি। ওই শিক্ষার্থীকে বিশেষভাবে পরীক্ষা না নেওয়ায় ভুল হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

সাটুরিয়ার ইউএনও শান্তা রহমান বলেন, ওই পরীক্ষার্থীকে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারত। বিষয়টি আমাকে অবগত করলেও ব্যবস্থা নিতে পারতাম। কিন্তু কেন্দ্র সচিব বা ওই শিক্ষক আমাকে বিষয়টি অবগত করেননি। আমাকে জানিয়েছেন ঘটনার অনেক পর। একজন শিক্ষকের কারণে শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নষ্ট হবে এটা হতে পারে না। ওই ভুলের জন্য শিক্ষককে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৫/০৯/২০২৩     

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়