শিক্ষকদের রম্য বিতর্ক ‘বিয়ে দিল্লির লাড্ডু’

এস এম মোজতাহীদ প্লাবন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদকঃ  প্রথমবারের মত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল শিক্ষকদের অংশগ্রহণে ‘রম্য বিতর্ক’। বিতর্কের বিষয়টিও অভিনব ও আকর্ষণীয়। ‘বিয়ে দিল্লির লাড্ডু : যে খাবে সেও পস্তাবে, যে না খাবে সেও পস্তাবে’ শিরোনামের ওপর আয়োজিত এই রম্য বিতর্কে অংশ নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাত (৭) জন শিক্ষক৷

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়ধ্বনি মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় এই বিতর্ক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির সহযোগিতায় দোলনচাঁপা হল বিতর্ক সংসদ এই রম্য বিতর্কের আয়োজন করেছে। এসময় কানায় কানায় ভরে যায় মঞ্চটির সামনে গ্যালারির মত দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসন ভবনের দীর্ঘ সিঁড়িটি।

বিয়ে করে পস্তানো ৩ জন শিক্ষক ও বিয়ে করে সুখী ৩ জন শিক্ষকের পাশাপাশি এখানে ছিল নিরপেক্ষ আরেকজন শিক্ষক। বিয়ে করে পস্তানোদের প্রতিনিধিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রায়হানা আক্তার, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষক নাহিদুল ইসলাম ও ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজের শিক্ষক রাগীব রহমান। অপরদিকে বিয়ে করে সুখী হওয়াদের পক্ষে কথা বলেন পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আসিফ ইকবাল আরিফ ও স্বপ্না পাপুল। দর্শন বিভাগের শিক্ষক তারিফুল ইসলাম ছিলেন নিরপেক্ষ। অর্থ্যাৎ তাঁর দায়িত্ব ছিল দুই পক্ষের যুক্তির লড়াই বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্তটি নেয়া। অবশেষে বিয়ে না করার পক্ষেই অবস্থান নেন তিনি। বিতর্কটিতে স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. তারানা নূপুর।

এদিন মঞ্চের গ্যালারিতে দর্শকের উপস্থিতি এত বেশি ছিল যে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। কানায় কানায় পূর্ণ মঞ্চের সকলেই বেশ উপভোগ করেছে পুরো বিতর্কটি। শিক্ষকদের যুক্তিতে হাসি-আনন্দে মেতে ওঠে দর্শকরা। এই আনন্দঘন পরিস্থিতি উপভোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরাও৷ বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য শুরুর দিকে উপস্থিত থাকলেও ট্রেজারারও ছিলেন পুরোটা সময়।

এতে উপস্থিত হয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এরকম রম্য বিতর্ক যত বেশি হবে, আমাদের মধ্যে তত প্রীতি জন্ম নেবে, হাসি জন্ম নেবে। বিশুদ্ধ হাসির চেয়ে বড় কোনো ওষুধ নেই। আমি এর আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।

এই অনুষ্ঠানের আয়োজক দোলনচাঁপা হল বিতর্ক সংসদ। আয়োজনটির ব্যাপারে জানতে চাইলে এই সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহুরা আক্তার বলেন, এই আয়োজনটি করার কথা প্রথম বলেন আমাদের শ্রদ্ধেয় হল প্রভোস্ট ও দোলনচাঁপা হল বিতর্ক সংসদের সভাপতি মাশকুরা রহমান রিদম ম‍্যাম। ম‍্যামের উৎসাহেই আমি এই কাজটি করার উদ‍্যোগ গ্রহন করি একমাস আগে। আমি আসলে ভাবিই নি যে এতটা সহযোগিতা পাবো আমার শিক্ষকদের থেকে। প্রথমে বিতর্কের প্রস্তাব নিয়ে আমি অনেক শিক্ষকের কাছেই গিয়েছি। সকল শিক্ষকই আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন এবং তাদের জায়গা থেকে সহযোগিতা করেছে। যখন স‍্যারদের থেকে এতবেশি সাড়া পেলাম তখন রিদম ম‍্যামকে নিয়ে বাজেট তৈরি করে ম‍্যামের নির্দেশেই কাজ করেছি। আর এ কাজে আমাকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে ডিবেটিং সোসাইটি।

এই অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গিয়েছে৷ অনুষ্ঠানটি শেষ হওয়ার পরেও অংশগ্রহণকারী শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসব করতে দেখা গেছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/১০/২০২৩   

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়