রোজায় দিনের বেলা পানাহার করায় কান ধরে উঠবোস

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁদপুরঃ জেলার কচুয়া বাজারে পবিত্র মাহে রমজানে দিনের বেলা খাবার হোটেলে গিয়ে পানাহার করায় এক ব্যক্তিকে কান ধরে উঠবোস করানো হয়েছে। সেই সঙ্গে দিনের বেলায় মুসলিম বা অমুসলিম কারো দোকানে কোনো মুসলিশ আহার করলে সেই দোকান পুরো রমজান মাস বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের। এরপর এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ওসি।

বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেলে পুরো ঘটনাটি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কচুয়ার ইউএনও মো. নাজমুল হাসান।

কচুয়া বাজার কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন এর আগে ২৮ মার্চ বিকেলে বাজারের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, থানার দালাল মমিন এবং কয়েকজন মাদরাসা শিক্ষক ও মসজিদের ইমামকে নিয়ে বাজারের দোকানপাট বন্ধ রাখতে অভিযান চালান। তারা ওই সময় অমুসলিমদের দোকানে কোনো মুসলিম আহার করলে তার দোকান পুরো রমজান মাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে হুঁশিয়ারি দেন। তাদের এ অভিযানের প্রায় আট মিনিটের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে।

ইউএনও বলেন, রমজানের শুরু থেকে উপজেলার ৮ নম্বর কাদলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিফাত হোসেন, ৯ নম্বর কড়ৈয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাম সওদাগর ও ১০ নম্বর গোহট উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন নিজ উদ্যোগে এলাকায় মাইকিং করে সতর্ক করেন, রমজান মাসে দিনের বেলায় কোনো খাবারের হোটেল খোলা রাখা যাবে না। এ বিষয়টি প্রশাসনের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছাড়াই তারা করেছেন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় বিষয়টি জানার পর আমি বাজার কমিটির সভাপতি জাকির হোসেনকে ডেকে আনি এবং এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলি। বুধবার রাতে আবার তাদের সবাইকে ডাকা হয়েছে।
কেন তারা এমন করলেন, তা জানার জন্য।

কচুয়া বাজারের ব্যবসায়ী মো. মহসিন মিয়া বলেন, মাইকে চেয়ারম্যানদের ঘোষণা শুনেছি। তবে উপজেলা থেকে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ধর্ম পালনে প্রত্যেকের স্বাধীনতা আছে। কচুয়ায় এমন পরিস্থিতি এবারই প্রথম দেখলাম।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইব্রাহীম খলিল বলেন, বাজার কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন নিজ উদ্যোগে হঠাৎ করে লোকজন নিয়ে এ ধরনের অভিযান চালিয়েছেন। আমি জানতে পেরে গতকাল সন্ধ্যাই এমন কার্যক্রম বন্ধ করতে বলেছি। পরে রাতেও তাকে আবার ডেকে এনেছি। তাকে বলেছি, সভাপতি বলে ছাড় দেওয়া হবে না। যদি আবার এমন কিছু করা হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৯/০৩/২০২৩  

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়