রংপুরঃ জেলার মিঠাপুকুরে গোপালপুর হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী অপহরণের শিকার হয়েছেন।
প্রায় মাস খানেক থানায় ঘুরার পরও মামলা নেয়নি পুলিশ। পরে রংপুর জেলা পুলিশ সুপারের সহায়তায় মামলা হলেও অপহরণকারীকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপহরণকরারীকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক দেখিয়ে চার্জশিট দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর জন্য আবারও দ্বিতীয় দফায় ওই স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছেন আসামীরা। অপহৃত স্কুল ছাত্রীকে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়েছেন স্বজনরা। ঘটনাটি ঘটেছে মিঠাপুকুর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে।
অপহৃত ওই স্কুল ছাত্রীর স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গোপালপুর হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে নিয়মিতভাবে উত্যক্ত করত কুঠিরপাড়া গ্রামের যুবক মোঃ জাহিদ হোসেন। প্রায় বছরখানের ধরে উত্যক্তের এ পর্যায়ে চলতি বছরের গত ২৮ ফেব্রয়ারী স্কুল থেকে ফেরার পথে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেন মোঃ জাহিদ হোসেন। দীঘদিন মেয়েকে খুজে না পেয়ে থানায় ১টি অভিযোগ দায়ের করেন ওই অপহৃত শিক্ষার্থীর বাবা মোঃ রেমানুল হক। কিন্তু পুলিশ প্রায় মাস খানেক ঘুরিয়েও মামলা নেয়নি। পরে রংপুর পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে মিঠাপুকুর থানায় ১টি মামলা দায়ের হয়। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পান মিঠাপুকুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোঃ নাজমুল হোসাইন।
অপহৃত শিক্ষার্র্থীর স্বজনদের অভিযোগ, মামলা দায়েরের পর থেকে পুলিশ অপহরণকারীদের পক্ষ নিচ্ছে। দীঘদিন পরে চার্জশিট দিলেও সেখানে নানা গোজামিল দিয়ে অপহরণকারীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। মুলত. অপহরণকারী মোঃ জাহিদ হোসেনের বয়স ১৮ পেরিয়ে গেলেও তাকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক দেখিয়ে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ফলে মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত হচ্ছে। এই ঘটনায় ওই চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি করেছেন অপহৃত শিক্ষার্থীর বাবা মোঃ রেমানুল ইসলাম।
রেমানুল ইসলাম জানান, আমার অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী অপহরণের শিকার হলো। দীঘদিন থানায় ঘুরেও মামলা নেয়নি। পরে পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে মামলা রেকর্ডভুক্ত হলেও চার্জশিটে আসামীকে বাঁচানো চেষ্টা করা হয়েছে। বাদ দেওয়া হয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধারা-উপধারা। আমি থানা-পুলিশ ও আদালতে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আদালত আমার মেয়েকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের রাখার পর মেয়েকে আমার জিম্মায় তুলে দেয়। আমার মেয়ে আবারও নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে একদিন আবারও স্কুল থেকে ফেরার পথে আমার মেয়েকে অপহরণ করেন ওই আসামীরা। তাকে উদ্ধারে সহযোগীতা করছে না পুলিশ আমাকে।
জানা গেছে, দীঘদিন পালিয়ে থাকার পর অপহৃত ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে কুঠিরপাড়া গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন অপহরণকারী মোঃ জাহিদ হাসান। তিনি ওই স্কুল ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু বিয়ে রেজিস্ট্রির কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। বয়স কম হওয়ার বিয়ে রেজিষ্ট্রি করেননি বলে জানিয়েছেন মোঃ জাহিদ হোসেনের বাবা মোঃ আব্দুল খালেক।
গোপালপুর হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মবিনুল ইসলাম বলেন, অষ্টম শ্রেণীর ওই শিক্ষার্থী খুব মেধাবী ছিল। শুনেছি বাড়ি ফেরার পথে সে অপহরণ হয়েছে। ওই বাবা বাদী হয়ে ১টি মামলাও করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মিঠাপুকুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ নাজমুল হোসাইন জানান, ‘ঘটনাটি প্রেম ঘটিত। আমরা অপহৃত ও অপহরণকারীকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছিলাম। এখন আদালতে বিচার করবে।’ তদন্তে আসামী ও কিছু ধারা-উপধারা বাদ দেওয়া হয়েছে, মামলাটি অন্য দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে?-এমন প্রশ্নের উত্তরে মোঃ নাজমুল হোসাইন আরও বলেন, তদন্তে আমি যেমনটি পেয়েছি, তেমনি রিপোর্ট আমি দিয়েছি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৬/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়