মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিলেন সাদিয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ জেলার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিলেন সাদিয়া আক্তার। বুকে কষ্ট চেপে লিখতে বসলেন পরীক্ষার খাতায়। কারণ আজ বুধবার ভোর রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তার মা জলি আক্তার (৩৭)। মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় বসেছেন তিনি।

সাদিয়া সলিমগঞ্জ আব্দুর রউফ মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আকানগর গ্রামের প্রবাসী শফিকুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে। তিনি মধ্যনগর নানার বাড়িতে থেকে সলিমগঞ্জ আব্দুর রউফ মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতেন।

জানা যায়, জলি বেগম আজ ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার লাশ আনার পর বাড়িজুড়ে শোকের মাতম শুরু হয়। মায়ের মৃত্যুর পর ভেঙে পড়লেও স্বজনরা বোঝানোর পর পরীক্ষা দিতে রাজি হন সাদিয়া। স্বজনরা যখন লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন এসএসসি পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে যান তিনি। পরীক্ষা শেষে সাদিয়া বাড়িতে ফিরে এলে আসর নামাজের পর মধ্যনগর গ্রামে জানাজা শেষে তার মাকে দাফন করা হবে।

সকালে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা কেন্দ্রে যান সাদিয়া। সহপাঠী ও কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সহযোগিতায় ইংরেজি প্রথম পত্র বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেন।

এ ব্যাপারে সলিমগঞ্জ আব্দুর রউফ মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আহমদ আলী বলেন, মা হারানো শিক্ষার্থী সাদিয়া খুবই মেধাবী। তার মায়ের মৃত্যুর বিষয়টি আমরা সকালেই জানতে পেরেছিলাম। আমরা তাকে সান্ত্বনা দিয়েছি।

তিনি বলেন, পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে শিক্ষার্থীরা সাদিয়াকে উৎসাহ দিয়েছে। তবে মাঝেমাঝে তাকে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষার খাতায় লিখতে দেখা গেছে।

সাদিয়া বলেন, ‘মা আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। চাইতেন আমি যেন পড়ালেখা করে অনেক বড় হই। তাই এমন অবস্থায়ও আমি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। মায়ের আত্মাকে আমি কষ্ট দিতে চাই না।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৩/০৫/২০২৩     

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তা