মোঃ রবিউল ইসলাম (রবীন), আদমদীঘি (বগুড়া প্রতিবেদকঃ জেলার আদমদীঘির সান্তাহার পৌর শহরের ৫নং ওয়ার্ডে ইয়ার্ড কলোনীর পাশে বস্তির এক ঘরে তার মা কে নিয়ে বসবাস করে আল আমিন। বয়স ১২ বছর । এই বয়সেই সংসারের হাল ধরেছে সে। সংসারে নানা অভাব। একমাত্র বোনকে শাহাগোলা নামে দুরের এক স্থানে মাদ্রাসায় রেখে পড়ালেখা কারাচ্ছে সে। সে খরচও বহন করে আল আমিন। সামান্য কিছু লেখাপড়া করেছে সে। মহামারি করোনা ও অভাবের কারনে পড়াশুনা আর হয়নি তার। শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়েছে সে।
কাক ডাকা ভোরে কাজের উদ্দেশ্যে বের হয় আল আমিন। ট্রেনে ট্রেনে বই বিক্রি করে সে। কোন কোন দিন বোতালজাত পানিও বিক্রি করে সে। দেখতে ফুটফুটে সুন্দর। গায়ের রং ফর্সা। মায়া মায়া চেহারা। সারাটা দিন ট্রেনে ফেরি করে সন্ধায় সান্তাহার স্টেশনে নেমে সারাদিনের আয় গুনে দেখে সে। ঘরে ফিরে সবটাকা মা’র হাতে তুলে দেয় সে। সকাল,দুপুরের খাওয়ার কোন ঠিক নেই তার। আল আমিন জানায়. ট্রেনের এসি বাথে তাদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। তাছাড়া ঈদের সময় প্রচন্ড ভিড়ে আমাদের ব্যবসা বন্ধ রাখতে হয়। ওই সময় আমরা ট্রেনে ওঠতেই পারি না। তখন প্লাটফর্মে পানি বিক্রি করি।
আল আমিনের ২ বন্ধু। সবুর, ইউসুফ। ওদের সবাইর এক পেশা। তিনজনই পথ শিশু। মানুষ ডাকে ’ টোকাই’। ওদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে ওরা ভুল করেছে। আজ (১৬ তারিখ রবিবার) সারাদিনে আল আমিনের আয় ৮০৪ টাকা। সবুরের আয় ৬৭৯ টাকা। ইউসুফের আয় ৪৮৯ টাকা। আল আমিনের বন্ধু সবুর বলে, আমাদের মধ্যে আল আমিন ছোট, কিন্তু ওর কোমল চেহারা আর ব্যবহারের কারণে ট্রেনের যাত্রীরা খুশি হয়ে ওকে বকশিস দেয়। ফলে ওর আয় ভালই হয়।
আল আমিন বলেন, আমি পড়াশুনা করতে যদি এখন স্কুলে ভর্তি হই, তাহলে আমার মা’র খরচ,আমার বোনের লেখাপড়ার খরচ কে দেবে ? পড়াশুনা তো করতে ইচ্ছে হয়। এই ’ টোকাই’ জীবন ভাল লাগে না।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৭/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়