ভুয়া নিয়োগে মেয়র ও প্রধান শিক্ষকসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

 নিজস্ব প্রতিবেদক।।

ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে নিয়োগের অভিযোগে কুমারখালী পৌর মেয়র ও কুমারখালী সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

মঙ্গলবার বিকালে কুষ্টিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীলকমল পাল বাদী হয়ে জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক আশরাফুল ইসলামের আদালতে মামলাটি করেছেন।

নীলকমল পাল বলেন, “ভুয়া কাগজপত্র তৈরি ও অপরাধমূলক অসদাচরণ করে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রেকর্ডপত্র সৃষ্টি করা এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালার বিধিবিধানসহ সরকারি প্রজ্ঞাপনের নিয়ম ভেঙে কুমারখালী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক/ কর্মচারী পদে নিয়োগদান ও গ্রহণের অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে।

“জড়িতদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারার অপরাধ সংগঠনের অভিযোগ আনা হয়েছে।”

এ মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন, কুমারখালী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহা. আবুল কাশেম, কুমারখালী পৌর মেয়র ও বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সাবেক সভাপতি মো. সামসুজ্জামান অরুণ, বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার শিক্ষক প্রতিনিধি মো. আব্দুস সাত্তার।

আসামিদের তালিকায় থাকা কুমারখালী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা হলেন, গণিত বিভাগের মো. খলিলুর রহমান, কম্পিউটার বিষয়ের আসমা বেগম মালা (৪৪), ব্যবসায় শিক্ষা শাখার এস এম আতি-বিন বাপ্পী (৩৪), সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের কুতুবুল আলম (৩৩), মনিরা পারভীন (৩৩), জীব বিজ্ঞান বিভাগের লুৎফুন নাহার লাবনী (৩৮), ভৌতবিজ্ঞান বিভাগের শেখ মো. সেলিম রেজা (২৮), আব্দুল্লাহ মোহাম্মদী (৩৬), ইসলাম শিক্ষা বিভাগের আমিরুল ইসলাম (৩৮) এবং সমাজ বিজ্ঞানের মো. শহিদুল ইসলাম (৪৮)।

এ ছাড়া বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ডেমোনেস্ট্রেটর সাদী আক্তার (২৬), নিম্নমান সহকারী বাসনা রানী কর্মকার (৪৪), আয়া মোছা. রুপালী খাতুন (৪৪), পরিচ্ছন্নতা কর্মী সনজিত কুমার বাঁশফোর (৩৬), নৈশ প্রহরি মো. নাসিম হোসেন (৩৪), অফিস সহায়ক মো. আলমগীর হোসেন (৪১), নিরাপত্তা প্রহরী মো. আমিরুল ইসলাম (২৫), ল্যাব সহকারী মোছা. খাদিজাতুল কোবরা (৪১) এবং কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৭)কেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে কুমারখালী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহা. আবুল কাশেম বলেন, “আমার শিক্ষকতার বয়স ৩৭ বছর, ৯ মার্চ রিটায়ারমেন্টে যাচ্ছি, এ সময়ে এই মামলা হয়ত আমার শেষ জীবনের একটা কলঙ্ক হয়ে থাকবে।

“আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নই, মামলা হয়েছে, আমিও আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করি। তবে এই মামলাটি কোনো প্রভাবশালী স্বার্থন্বেষী মহলের ইন্ধনে হয়েছে বলে- আমি মনে করি।”

কুমারখালী পৌসভার মেয়র সামসুজ্জামান অরুণ মামলাটিকে ‘আদৌতে একটা বানোয়াটি মামলা’ হিসেবে দাবি করে বলেন, “এখানে যে অভিযোগে আমাকে এজাহারভুক্ত করা হয়েছে সেসব বিষয়ের সাথে আমার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনোরূপ সম্পৃক্ততা নেই।

কোনো স্বার্থন্বেষী ব্যক্তি হীনস্বার্থে তার সুনাম ক্ষুন্ন করতে এই মামলার ইন্ধন যুগিয়েছে বলেও দাবি করেন এই জনপ্রতিনিধি।