ঝিনাইদহঃ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে অনুদানের অর্থ ব্যয় দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এক লাখ ৫ হাজার টাকা আত্মসাতের এই অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ভাতঘরা দয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজাহান শেলীর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, কালিগঞ্জ উপজেলার ভাতঘরা গ্রামে অবস্থিত বিদ্যালয়টির নামে প্রধান শিক্ষক কালিগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ডে শিপন কম্পিউটার নামের একটি দোকান থেকে গত ৩ জুলাই এইচপি কোরআই ফাইভ ব্রান্ডের একটি ল্যাপটপ (মূল্য ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৩০০ টাকা)। একই ব্রান্ডের একটি প্রিন্টার (মূল্য ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৭০০ টাকা) কিনেছেন। কিন্তু ওই কম্পিউটারের দোকানের ১৬৫৯ নম্বর চালানে উল্লেখিত ৭৫ হাজার টাকার ল্যাপটপ ও প্রিন্টার দোকানের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম শিপন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের নিকট বিক্রি করেননি।
একইভাবে বাজারের মুক্তার লাইব্রেরী থেকে ৬০০ টাকা মূল্যের প্রতিটি বই মোট ৫০টি বই ৩০ হাজার টাকা কেনা দেখানো হয়েছে। অনুসন্ধানে মুক্তার লাইাব্রেরীর স্বত্বাধিকারী মুক্তার হোসেন ভাতঘরা দয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট ০৬৮ নম্বর চালানে কোনো বই বিক্রি করেননি বলে জানান। অর্থাৎ শিপন কম্পিউটার এবং মুক্তার লাইব্রেরী থেকে কোনো মালামাল ক্রয় না করে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে পিবিজিএসআই স্কিমের অনুদানের অর্থ ব্যায় দেখিয়ে উপজেলা অফিসে এই ভুয়া বিল ভাউচার জমা দিয়েছেন।
আরো জানা গেছে, ভুয়া ক্রয় কমিটি দেখিয়ে স্কুলের তিনজন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে তাদের স্বাক্ষরের পাশাপাশি ভুয়া বিল ভাউচার গুলোতে সভাপতি একে জিল্লুর রহমান আজাদ ও প্রধান শিক্ষক নিজেই স্বাক্ষর করে তা জমা দিয়েছেন। এমন চতুরতার অবলম্বন করেছেন প্রধান শিক্ষক, যাতে করে বিষয়টি ধরা না পড়ে। উল্লেখ্য, ভাতঘরা দয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের টাকা আত্মসাতের সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।
ভাতঘরা দয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজাহান শেলী মাল না কিনে ভাউচার প্রস্তুত করে জমা দেওয়ার ব্যাপারটি স্বীকার করে বলেন, ‘আগেই ভাউচার জমা দেওয়ার নিয়ম। এ কারণে এমনটি করা হয়েছে। এই টাকা আত্মসাতের প্রশ্নই আসে না।’
কালিগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারক আহমেদ জানান, পিবিজিএসআই স্কিমের অনুদানের টাকা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নামে তাদের হিসাবে ঢুকেছে। পরিপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যয় করার কথাও বলা হয়েছে তাদেরকে। অনুদানের কোনো অর্থ যদি নিয়মের বাইরে ব্যয় করা হয় তাহলে দায়-দায়িত্ব ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও পরিচালনা পরিষদ বহন করবে বলেও তিনি জানান।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১০/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়