ফরিদপুরঃ জেলার বোয়ালমারীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বোয়ালমারী জর্জ একাডেমির প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ মোল্যাকে নিয়মবহির্ভূতভাবে বরখাস্ত করার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কুলের শিক্ষকরা।
জানা গেছে, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও চতুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুল হাসান ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিদ্যালয়ে এসে অফিস সহকারী জামাল উদ্দিনের কাছে প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কারের চিঠি দেন। এ সময় প্রধান শিক্ষক দাপ্তরিক কাজে বিদ্যালয়ের বাইরে ছিলেন। পরে জানতে পেরে গত মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষক ও সাংবাদিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাঁকে অর্থ আত্মসাৎ, নারী কেলেঙ্কারি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিদ্যালয়ের ফলাফল বিপর্যয়সহ একাধিক অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা বলা হয়, যা সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূত। তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কয়েকজন সদস্য নির্বাচনের পর থেকেই নানা অনৈতিক সুবিধা বাগিয়ে নিতে তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তিনি সেসব অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হলে সভাপতিসহ কয়েকজন সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। পরিচালনা কমিটির কোনো প্রকার সভা না করে সভাপতি নিজ বাড়িতে আজ্ঞাবহ কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে নিয়মবহির্ভূত সভা করেছেন। অনেক সদস্য এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। ওই গোপন বৈঠকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আব্দুল আজিজ জানান, সম্প্রতি বিদ্যালয়টি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হয়। এতে বাজার মূল্য থেকে মাত্রাতিরিক্ত বেশি দেখানো হয়েছে। একজন অফিস সহকারী ও ল্যাব অ্যাসিট্যান্ট নিয়োগ করা হবে। সভাপতি আগেই প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছেন। প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এসি লাগানো ও স্কুলের গেট নির্মাণে স্কুল ফান্ড থেকে টাকা দিতে অস্বীকার করায় সভাপতির সঙ্গে তাঁর বিরোধ বাধে। সাময়িক বহিষ্কারের আগে তাঁকে কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়নি বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. কামরুল হাসান বলেন, সকল প্রকার নিয়ম মেনে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক কমিটির সঙ্গে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেন না। সভা ডাকেন না এবং তাদের সঙ্গে বসেন না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সাময়িক বহিষ্কারাদেশ সঠিক কিনা তা তদন্তসাপেক্ষে বলা যাবে। তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিসহ ১০-১২ জন তাঁকে একটি দরখাস্ত দিয়েছেন। তারা প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কার করার বিষয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৭/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়