নিজস্ব প্রতিবেদক।।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস) নতুন করে ক্যাডার তৈরির কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে সরকার। বরং এ ক্যাডার সংখ্যা আরও কীভাবে সংকুচিত করা যায়; এখন সেই বিষয়টি ভাবা হচ্ছে। এরইমধ্যে অর্থনীতি ও প্রশাসন ক্যাডারকে এক করে দেয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এভাবে আরও একাধিক ক্যাডারকে অন্য ক্যাডারের সঙ্গে সংযুক্তির পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) নতুন করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে (বিসিএস) টেক্সটাইল ক্যাডার যুক্ত করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি তখন বলেছিলেন, টেক্সটাইল ক্যাডার দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মতের পর ক্যাডার বাড়ানোর বিষয়টি সামনে আসে।
এরপর গতকাল বুধবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার-দলীয় সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেন নিজের সম্পূরক প্রশ্নে ‘টেক্সটাইল ক্যাডার’ সংযুক্তির দাবি জানান। তখন প্রধানমন্ত্রী মোজাফফর হোসেনের প্রত্যুত্তরে বলেন, জনপ্রশাসনে নতুন করে কোনো ক্যাডার তৈরি করার কোনো পরিকল্পনা নেই।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে শেখ হাসিনা জানান, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। কিন্তু সেখানে কঠিন ছিল টেকনিক্যাল লোক পাওয়া। বিদেশ থেকে লোক নিয়ে এসে কাজ দেওয়া হয়। সরকার টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছে, যাতে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি হয়; তাদের চাকরির অভাব নেই।
সরকার প্রধান বলেন, ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যারিস্টারিসহ অন্যান্য বিষয়ে পাস করে বিসিএস দেওয়ার প্রবণতা আছে। তারা প্রশাসন, পুলিশসহ বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়। আমাদের এখানে পাস করার সঙ্গে সঙ্গে তারা তৈরি পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন কারখানায় চাকরি পাওয়ার নিশ্চয়তা ছিল।
বর্তমানে বিসিএসে ক্যাডার সংখ্যা হল ২৬টি। ১৪টি সাধারণ ও ১২টি পেশাগত/কারিগরি ক্যাডার রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশ, কর, শুল্ক ও আবগারি, নিরীক্ষা ও হিসাব, আনসার, সমবায়, পরিবার পরিকল্পনা, খাদ্য, তথ্য, ডাক, রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক এবং বাণিজ্য।
এছাড়া প্রফেশনাল ক্যাডারে রয়েছে সড়ক ও জনপথ, গণপূর্ত, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, বন, স্বাস্থ্য, রেলওয়ে প্রকৌশল, পশুসম্পদ, মৎস্য, পরিসংখ্যান, কারিগরি শিক্ষা, কৃষি এবং সাধারণ শিক্ষা।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্যাডার সিস্টেম বেশি হয়ে যাচ্ছে। ব্যারিস্টার পুলিশও আছে। ডাক্তারও পুলিশে আছে। এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। আমরা কিন্তু এরই মধ্যে অর্থনীতি ও প্রশাসন ক্যাডারকে এক করে দিয়েছি। এ ক্ষেত্রে যতটা সংকুচিত করা যায় সেটা ভালো। নতুন নতুন ক্যাডার সৃষ্টি করলেই যে চাকরির দুয়ার খুলে যাবে, ব্যাপারটা তেমন নয় বলেও জানান তিনি।