নিউজ ডেস্ক।।
বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রথমবারের মত নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অডিট আপত্তির কথা গণমাধ্যমে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ। তবে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ এই বিজ্ঞপ্তি।
গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএসএমএমইউ জানায়, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের নিয়ম বহির্ভূত ব্যয়, পিপিআর অনুসরণ না করে কেনাকাটা, ভ্যাট ও আয়কর কর্তন না করা, ব্যাংক চার্জ প্রদান না করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৬৬ কোটি ৩২ লাখ ৬৮ হাজার ২৭৭ দশমিক ৮৬ টাকার অডিট আপত্তি দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক ব্যবস্থাপনা শাখা। গত ২৪ জুলাই ওই শাখার উপ-সচিব উম্মে কুলসুম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই অডিট আপত্তিসমূহ সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকের বরাবর পাঠানো হয় এবং ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।
সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের যে সব বিষয়ে অডিট আপত্তি দেওয়া হয়েছে তখন এই হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান।
এতে আরও বলা হয়, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের ঠিকাদার, সরবরাহকারী ও কনসালটেন্টদের বিল থেকে ভ্যাট কর্তন না করায় সরকারের ২১ কোটি ৯৬ লাখ ১৪ হাজার ১৪৬ টাকার আর্থিক ক্ষতি, আয়কর কর্তন না করায় ২৩ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭২ টাকার ক্ষতি, অডিট চলাকালীন ব্যাংক চার্জ ও অনাবাসিক ইমারত নির্মাণ ব্যয় বাবদ ৭৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকার বিল ভাউচার উপস্থাপন করতে না পারা, কেনাকাটার ক্ষেত্রে পিপিআর ২০০৮ বহির্ভূত ২০ লাখ ৬২ হাজার ১২৬ টাকার অনিয়মিত ব্যয়, কেনাকাটার ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত ১৬ কোটি ৯৯ লাখ ৪৬ হাজার ৮৭৮ টাকার অনিয়মিত ব্যয়, ডিপিএ এক্সপেনডিচার বাবদ আর্থিক বিবরণতে ২২ হাজার ৬৫৫ দশমিক ৮৬ টাকা উল্লেখ থাকলেও আইবাস এ উল্লেখ না থাকা এবং আর্থিক বিবরণী ও ব্যয় বিবরণীতে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ২৩ হাজার টাকার গড়মিল থাকার বিষয়ে অডিট আপত্তি জানানো হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটিও করেছে বিএসএমএমইউ। আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান বলেন, ‘একটা উদ্দেশ্য নিয়ে এটা করা হয়েছে। আমি যেন ভিসি হতে না পারি সেজন্য ষড়যন্ত্র। প্রকল্পের সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করেছে কোরিয়া সরকার। তাদের অনুমোদন, মন্ত্রণালয় এবং ভিসির অনুমতি ছাড়া কোনো কাজ হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অডিট আপত্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া। একটা নিষ্পত্তি হলে আরেকটি আসে, আরেকটি হলে আরেকটি। এটা কোনো ব্যাপার না। বিষয় হলো আমি ঠিক করেছি কি না। আপত্তি দিলে আমরা জবাব দেই। এভাবেই নিষ্পত্তি হয়। এগুলোও সেভাবে হবে।’