বাকেরগঞ্জে স্কুলছাত্রের মৃত্যু, প্রধান শিক্ষকসহ দুই জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিউজ ডেস্ক।।
বরিশালের বাকেরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের নির্যাতনে জাবের হোসেন নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান শিক্ষকসহ দুই জনের থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া আরও অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামী করা হয়েছে।

শুক্রবার (১সেপ্টেম্বর) নিহত শিক্ষার্থী জাবেরের মা রিনা বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলা নং – ১। নিহত জাবের বাকেরগঞ্জের দুধাল ইউনিয়নের গোমা গ্রামের কামাল হাওলাদারের ছেলে। সে জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

মামলার নাম উল্লেখ করা দুই আসামী হলো জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দুধাল ইউনিয়নের গোমা গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিন মোল্লার ছেলে মো. আহসান হাবিব মোল্লা ও একই গ্রামের মৃত খালেক মোল্লার ছেলে মনোয়ার হোসেন মন্টু।

মামলার এজাহারে বাদি নিহত ছাত্র জাবের হাওলাদারের মা রিনা বেগম বলেন, গত ১৭ আগস্ট জিপিএস ছাত্র শিক্ষক মিলে স্কুলের মাঠে পিকনিকের আয়োজন করে। আমার ছেলে মো. জাবের ওই পিকনিকে নিতে ১৭ আগস্ট সকাল সাড়ে দশটার দিকে বাড়ি থেকে স্কুলে যায়।

ওইদিন দুপুরে স্কুল মাঠে খাওয়া-দাওয়া শেষে বাড়িতে না এসে কতিপয় বন্ধুদের নিয়ে মৃদুস্বরে গান-বাজনা করতে থাকে । রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে এক নম্বর আসামি আহসান হাবিব মোল্লা ও দুই নম্বর আসামী মনোয়ার হোসেন মন্টুরসহ ৩-৪ জন আসামি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লাঠি সোটা নিয়ে ছেলেদের গান-বাজনায় বিরক্তির কারণ দেখিয়ে ধাওয়া করে।

আমার ছেলে তাদের দেখে ভয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে জিপিএস মাধ্যমিক স্কুলের মাঠের দক্ষিণ পাশে পড়ে যায়। এ সময় আসামিরা আমার ছেলেকে জাপটে ধরে। তখন এক নম্বর আসামি মো. আহসান হাবিব মোল্লা ও দুই নম্বর আসামি মনোয়ার হোসেন আমার ছেলের বুকের উপর দাঁড়াইয়া খুনের উদ্দেশ্যে পাড়ায় এবং লাঠি দিয়ে কয়েকটি আঘাত করে। এতে আমার ছেলে অজ্ঞান হয়ে যায়।

আসামিরা তখন তার মৃত্যু হয়েছে মনে করে মাঠের মধ্যেও অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায। পরে কয়েকজন আমার ছেলেকে তাৎক্ষণিক প্রাথমিক সেবা দিলে তার জ্ঞান ফিরে আসে। বাড়িতে ফিরে এসে আমাকে ঘটনা বিস্তারিত জানায়। বুকে এবং পেটে প্রচন্ড ব্যথার কথা জানায জাবের। আমি তাকে বোমা বাজারে গ্রাম্য ডাক্তার পলাশের কাছে নিয়ে যায় এবং ওষুধ নিয়ে এসে ত খাওয়ায়। আমার ছেলের বুকের ব্যথা আরো বাড়তে থাকে এবং অনবরত বমি করতে থাকে।

পরে আমার ছেলের অবস্থার অবনতি হতে থাকলে ২০ আগস্ট বিকালে আমার ছেলে এবং সহপাঠী শাকিব বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার ডাক্তার আমার ছেলেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রাথমিক ব্যবস্থাপত্র প্রদান করেন। আমি ছেলেকে নিয়ে বরিশাল এলাকায় আমার ভাগ্নির বাসায় অবস্থান করি। আমার ছেলে আরও বেশি অসুস্থতার কথা জানালে গত ২২ শে আগস্ট জাবেকে নিয়ে আবার শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন আমার ছেলের অবস্থা আশঙ্কা জনক ডাক্তার হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন।

আমার ছেলে হাসপাতালে থাকতে না চাইলে ২৭ আগস্ট সে যুগে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসি বাড়িতে আসার মুহূর্তেই আমার ছেলের অবস্থা মরণাপন্ন হইলে ওইদিনই রাত আটটার দিকে বাড়ি থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে পুনরায় আমার ছেলেকে বরিশালে নিয়ে রওনা দেই। রাত্র আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে বিএমপি কোতোয়ালি থানাধীন শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইমার্জেন্সি রুমের সামনে পৌঁছালে আমার ছেলে নাক মুখ দিয়ে রক্ত নির্গত হতে শুরু করে এবং সেখানে তার মৃত্যু হয়।

সব আসামি বে আইনের জনতায় আমার ছেলেকে অবৈধ অবরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে ও পাড়াইয়া গুরুতর যখন করার ফলে আমার ছেলের মৃত্যুবরণ করে। ছেলের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসলে থানা পুলিশ এসে লাশের স্রোতাল প্রস্তুত করো তো ময়নাতদন্ত শেষে ক্লাস আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। পারিবারিক কবরস্থানে দাফন দেয়া হয়। পরবর্তীতে কতিপয় সাক্ষীর কাছে ঘটনার বর্ণনা অবগত হয়ে আত্মীয়-স্বজনের সাথে আলোচনা করে মামলা করতে বিলম্ব হইল।

আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে করে সঠিক বিচারের দাবি জানিয়েছেন জাবেরের মা।

এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম মাকসুদুর রহমান ডেল্টা টাইমসকে জানান, শিক্ষার্থী জাবের নিহত হওয়ার ঘটনায় শুক্রবার মামলা হওয়ার পরই তদন্ত শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।