প্রেস বিজ্ঞপ্তি
আগামী ঈদ-উল-আযহার পূর্বেই ‘সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা ও বাড়ি ভাড়া প্রদানসহ ‘অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ১০% কর্তনের প্রজ্ঞাপন বাতিল’ এবং ‘মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ’ -এর দাবীতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র সংবাদ সম্মেলন।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ২১ জুলাই ২০১৯ রবিবার সকাল ১১টায় “জাতীয় প্রেস ক্লাব -এর তৃতীয় তলায় মাওলানা আকরাম খাঁ হল” এ আগামী ঈদ-উল-আযহার পূর্বেই ‘সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা ও বাড়ি ভাড়া প্রদানসহ ‘অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ১০% কর্তনের প্রজ্ঞাপন বাতিল’ এবং ‘মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ’ -এর দাবীতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ কাওছার আলী শেখ এর সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ বজলুর রহমান মিয়া। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য বাবু রঞ্জিত কুমার সাহা, সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কাশেম, সহ-সভাপতিবৃন্দ সর্বজনাব আলী আসগর হাওলাদার, বেগম নুরুন্নাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জামিল মোঃ সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মোস্তফা জামান খান, দপ্তর সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, গ্রহন্থাগার সম্পাদক অশোক কান্তি গুহ, সহ দপ্তর সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম, সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফাহমিদা রহমান, সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহানা বেগম, কেন্দ্রীয় সদস্য- আজম আলী খান, প্রবীর রঞ্জন, মনোরঞ্জন মন্ডল প্রমুখ শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণ ‘মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ’ এর জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। যার ফলশ্রুতিতে ডিসেম্বর ২০১৮ একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে শিক্ষা ও শিক্ষক বান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য নিঃশর্তভাবে ৫% বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও বৈশাখী ভাতা প্রদান করায় বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণ মানীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারকে সাধুবাদ জানান।
এমতাবস্থায় শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের কারণে যখন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারিদের ন্যায়সঙ্গত দাবী “মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ” -এর বিষয়ে সরকার ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে শিক্ষক সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা ছাড়াই “মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ” এর নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা শিক্ষক স্বার্থবিরোধী তথাকথিত সুবিধাভোগী কতিপয় শিক্ষক নেতার প্ররোচনা ও যোগসাজসে বিগত ১৫ জুন ২০১৭ কল্যাণ ট্রাস্ট এবং ২০ জুন ২০১৭ অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারিদের বেতন থেকে ১০% কর্তন করার জন্য পৃথক দু’টি অযৌক্তিক ও অমানবিক গেজেট প্রকাশ করায় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’র ব্যানারে সারা দেশের শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের ফলে তা স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখ একাদশ জাতীয় নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন পূর্বে ১০% কর্তনের জন্য পুনরায় একটি আদেশ জারি করেন এবং শিক্ষক-কর্মচরীদের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে শিক্ষা সচিব জনাব সোহরাব হোসাইন ভুল স্বীকার করে উক্ত আদেশটিও প্রত্যাহার করে নেন। আবার গত ৯ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখ অবসর সুবিধা বোর্ডের সভায় উপস্থিত সদস্যবৃন্দের সামনে অতিরিক্ত ৪% কর্তন না করার জন্য অভিমত পূনর্ব্যক্ত করেন।
পরিতাপের বিষয় শিক্ষক সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিদের সাথে কোনরূপ আলোচনা ছাড়াই গত ১৫ এপ্রিল ২০১৯ তারিখ অতিরিক্ত ৪% সহ মোট ১০% কর্তনের জন্য মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কে লিখিত আদেশ প্রদান করায় এপ্রিল ২০১৯ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% সহ মোট ১০% কর্তন করা হচ্ছে। ফলে সারাদেশের শিক্ষক-কর্মচারীগণ অত্যন্ত মর্মাহত ও বিক্ষুব্ধ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা যত উন্নত, সে দেশ ও জাতি তত উন্নত। আমরা একদিকে শিক্ষক-কর্মচারী হলেও অপর দিকে পিতা/মাতাও বটে। আমরা আমাদের সন্তানসহ এদেশের সকল সন্তানদের স্বল্প ব্যয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাই। তাই মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবী শুধু শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নাই; এ দাবী এখন জন দাবীতে পরিণত হয়েছে।
এমতাবস্থায় মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের লক্ষ্যে আগামী ঈদ-উল-আযহার পূর্বেই ‘সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা ও বাড়ি ভাড়া প্রদানসহ ‘অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ১০% কর্তনের প্রজ্ঞাপন বাতিল’ এবং ‘মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ’ -এর দাবীতে নি¤œরূপ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়:Ñ
* ২৪ জুলাই ২০১৯ বুধবার সকাল ১১টায় সারাদেশে সকল ‘জেলা সদরে’ এবং কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় ‘জাতীয় প্রেস ক্লাব’ -এর সামনে ‘প্রতীকী অনশন পালন’।
* ২৮ জুলাই ২০১৯ রবিবার সকাল ১১টায় ‘অবসর সুবিধা বোর্ড ও ক্যাণট্রাস্ট অফিস ঘেরাও’।
* এরপরেও যদি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবী মেনে নেয়া না হয় এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ১০% কর্তন করা হয় তবে সারাদেশের হতাশ ও বিক্ষুব্ধ শিক্ষক-কর্মচারীগণ কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবেন।