শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ গত কয়েক মাস ধরে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ও নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামায়াতুল আনসার হিল ফিন্দাল শারক্বীয়া’র বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনী লাগাতার অভিযান ও গোলাগুলির আতঙ্কে বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা স্কুলে না আসায় রুমা উপজেলার দুর্গম এলাকার বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রুমার পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আরথাহ্ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাসত্লাং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের পাকনিয়ার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুননুয়াম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জেসপাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর কয়েকটি বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে বন্ধের পথে রয়েছে কয়েকটি।
রুমার কয়েকজন অভিভাবক জানান, বর্তমানে এলাকায় খারাপ পরিস্থিতির কারণে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে সবাই ভয় পাচ্ছেন। এ কারণে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন সবাই। যাদের সামর্থ্য আছে তারা অনেকেই ছেলে-মেয়েদের জেলা বা সদর উপজেলা নিয়ে লেখাপড়া করাচ্ছেন। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা গরিব। তাদের পরিবারে পক্ষে বাইরে লেখাপড়া করানো সম্ভব না। গরিবরা বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
বিভিন্ন পাড়ার কারবারি ও স্থানীয়রা জানায়, এমনিতে দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় দুর্বল। তার মধ্যে আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে না পারায় বিদ্যালয় বন্ধ আছে। এতে লেখাপড়ায় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে তাও কেউ বলতে পারছে না।
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন শিবলী বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিরূপ পরিস্থিতির কারণে কয়েকটি সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমে গেছে। অভিভাবকরা আতঙ্কে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছে না- বিষয়টি জানতে পেরেছি। শিক্ষার্থীরা না আসায় বিদ্যালয় প্রায় বন্ধের পথে।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরান বলেন, রেমাক্রি প্রাংসার দুটি বিদ্যালয় খুবই দুর্গম এলাকায়। পায়ে হেঁটে উঁচু-নিচু পাহাড় বেয়ে যেতে হয়। এর মধ্যে পাকনিয়ার পাড়া স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগে থেকেই কম ছিল। বর্তমানে সেখানে মাত্র ১৬-১৭ জনের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে।
বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম বলেন, দুর্গম পাহাড়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এমনিতেই কম। বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি আরও কমে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদ্যালয় খোলা হয় আবার খারাপ পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায়। তবে সরকারিভাবে কোনও বিদ্যালয়ই বন্ধ নয়।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০২/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়