নোয়াখালীঃ কোচিংয়ের বিরোধিতা করায় নোয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে বরখাস্তের পর পুর্নবহাল করা সহকারি শিক্ষিকা তাছলিমা বেগমকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়ায় ফেসবুক লাইভে এসে প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) ভোরে নিজের ফেসবুক লাইভে এসে তিনি ওই অভিযোগ করেন।
জানা যায়, কোচিংয়ের বিরোধিতা করায় গত ১১ অক্টোবর (বুধবার) সহকারি শিক্ষিকা তাছলিমা বেগমকে সাময়িক বরখাস্ত করেন প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদ। এ বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামিমা আক্তারের হস্তক্ষেপে গত ১৬ অক্টোবর (সোমবার) শিক্ষিকাকে বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে পুনর্বহাল করা হয়।
তাছলিমা বেগম ১৫ মিনিটের লাইভে অভিযোগ করে বলেন, নোয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকদের জিম্মি করে রেখেছেন প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদ। তিনি সরকার নিষিদ্ধ কোচিং বাণিজ্য, প্রকল্পের টাকা আত্মসাতসহ নানা ধরণের অনিয়ম করে আসছেন। কোচিংয়ের নামে শিক্ষার্থীদের থেকে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হলেও এর ৪০০ টাকাই নিয়ে যান প্রধান শিক্ষক। তার কথার বাহিরে গেলে শিক্ষকদের হয়রানি ও শিক্ষার্থীদের ক্লাসের হাজিরা বন্ধ করে দেন। এছাড়া নারী কর্মচারীদের তার স্বপ্নচুড়ার বাসায় নিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করান প্রধান শিক্ষক।
তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষকের মানসিক নির্যাতনে আমি এতোটাই বিপর্যস্ত যে সুইসাইড নোট লিখে বার বার আত্মহত্যার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার চারটি বাচ্চার কথা চিন্তা করে আমি সে পথ থেকে ফিরে আসি। আমি সত্য কথা সবার কাছে তুলে ধরলাম। আমি চাই সঠিক তদন্ত করে এসব অনিয়মের বিচার হোক। একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাক। এখন আমি পরিবারসহ আমার নিরাপত্তা চাই।
সহকারি শিক্ষিকা তাছলিমা বেগম জানান, ‘প্রধান শিক্ষক ধূর্ত, প্রতারক ও ত্রাস প্রকৃতির লোক। তার কথার বাহিরে গেলে কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে তিনি শান্তি দেন না। গত ২২ মে তিনি আমাকে অনৈতিক কথা বলেন আমি এর প্রতিবাদ করার পর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে তিনি আমার চাকরি খাওয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন। গত ১১ অক্টোবর (বুধবার) তিনি মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরদিন এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামিমা আক্তারের হস্তক্ষেপে গত সোমবার (১৬ অক্টোবর) আমাকে আবার পূনর্বহাল করে নেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে আমাকে ক্লাস থেকে নিজের কক্ষে ডেকে নেনে প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদ। এসময় তিনি ও তার লোকজন আমাকে জিম্মি করে পড়তে না দিয়ে কম্পিউটারে লেখা একটি কাগজে জোরপূর্বক সই নেন। পরে জানতে পারি ওই কাগজটি ছিল ঘটনাগুলো মিথ্যা সংক্রান্ত প্রতিবাদ। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রাতে পাল্টা লিখিত বক্তব্য পাঠাই। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষক ও তার লোকজন আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় ভয়ে আমি এলাকা ত্যাগ করি।’
এসব বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদের মুঠোফোন বার বার কল দিলে তিনি রিসিভ না করে কেটে দেয়।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, শিক্ষিকার ফেসবুক লাইভটি দেখেছি। তার লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়