নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রমজান মাসের ছুটি পরিবর্তন হচ্ছে না। আগের ঘোষিত ১৫ রোজা, অর্থাৎ ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ক্লাস চলবে। এরপর ৭ এপ্রিল থেকে শুরু হবে ছুটি। ছুটি থাকবে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত। ২৭ এপ্রিল থেকে ফের ক্লাস শুরু হবে।
বুধবার (২২ মার্চ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষাবিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা অনুষ্ঠিত হয় মিরপুরের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে (ডিপিই)।
সভা সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি হয়েছে। এই ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে ১৫ রোজা পর্যন্ত রমজান ও ঈদুল ফিতরের ছুটি আগেই নির্ধারণ করে শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ করা হয়। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৪ মার্চ থেকে রমজান শুরু হওয়ায় ২৩ মার্চ থেকে নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ছুটি ঘোষণা করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। সেভাবে এ স্তরের বার্ষিক শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ করা হয়।
এদিকে মাধ্যমিকের স্কুল-কলেজে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) থেকে রমজানের ছুটি শুরু হচ্ছে। তবে খোলা থাকছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এজন্য এ স্তরের শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের নেতারা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিতভাবে ছুটি সমন্বয় করার দাবি জানান। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানাভাবে এ একই দাবি জানান শিক্ষকরা।
এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সংসদীয় কমিটির সভায় ছুটি বাড়ানোর প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। তবে সেই প্রস্তাব সভায় নাকচ হয়। ছুটি কমিয়ে দিলে শিখন ঘাটতি কাটানো কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে শিক্ষার্থীরা আরও পিছিয়ে যাবে বলে সভায় তুলে ধরেন কমিটির সদস্যরা।
জানতে চাইলে ডিপিই’র মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটির দিনপঞ্জি অনুযায়ী ৭-২৬ এপ্রিল রমজান ও ঈদের ছুটির জন্য বন্ধ থাকবে। ২৭ এপ্রিল থেকে ক্লাস শুরু হবে। এটি পরিবর্তন হচ্ছে না। দিনপঞ্জি অনুযায়ী ছুটি কার্যকর হবে।
তিনি বলেন, আগামী ১৫ রমজান পর্যন্ত ক্লাস চললেও এরমধ্যে দুটি শুক্রবার রয়েছে। দুই শুক্র-শনিবার নিয়ে বন্ধ থাকছে চারদিন। এরমধ্যে আবার বড়দিন রয়েছে। সব মিলিয়ে রোজার মধ্যেই ১০ দিন ক্লাস হতে পারে।
কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, আলী আজম, ফেরদৌসী ইসলাম ও মাহমুদ হাসান অংশ নেন।
এ বৈঠকে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট বিল, ২০২২’ এর ওপর বিস্তারিত আলোচনা হয়। পরবর্তী বৈঠকে অধিকতর পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কমিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলে নতুন জাতীয়করণ করা শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা, নিয়মিত চাঁদাদান এবং তহবিলে প্রাপ্ত সুবিধাগুলো অবহিত করার জন্য প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে।
বৈঠকে করোনার সময় শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে যে ঘাটতি হয়েছে, তা শনাক্ত করে পূরণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম সম্পর্কিত এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) এর পাঠ পরিকল্পনা ও অনুষদভিত্তিক কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) নিয়ে আইন করার জন্য সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবসহ, মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২২/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়