নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ প্রশাসনিক পদে জেনারেল শিক্ষকদের নিয়োগ প্রদান, আসন্ন বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ, ঈদের আগে পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বেতন বৃদ্ধি, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা বাড়াতে ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন মাদরাসা শিক্ষকরা। তাদের দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে ঈদুল আজহার পর সারাদেশে একযোগে আন্দোলন করার হুমকিও দিয়েছেন তারা।
শনিবার (২৭ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমজিটিএ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ বলেন, আগামী বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। ডিজিটাল দেশ প্রতিষ্ঠা করতে হলে শিক্ষাখাতে বাজেট বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। ইউনেস্কোর পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষাখাতে মোট জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দ দিতে বলা হয়েছে। সেখানে গত বাজেটে মাত্র ৩ শতাংশ ছিল। মাদরাসা-কারিগরিতে মোট ৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও সেটি ১৫ হাজারে উন্নীত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসা-কারিগরি শিক্ষকরা তাদের বেতন-ভাতাসহ সব ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মাসিক বেতন-ভাতা পেতেও পরবর্তী মাসের ২০ তারিখ পার হয়ে যাচ্ছে। এসব নিয়ে বারবার আন্দোলন করে আসলেও আমলে নেওয়া হচ্ছে না। শিক্ষক-কর্মচারীদের অধিকার আদায়ে ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। দাবি মেনে নেওয়া না হলে আগামী ঈদের পর সংবাদ সম্মেলন করে সারাদেশে একযোগে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেওয়ার কথাও জানান তিনি।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে…
১। শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের জিডিপি ৫ শতাংশ বরাদ্দ
২। আসন্ন ঈদুল আজহার পূর্বেই শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান
৩। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বেতন বৃদ্ধি বা মহার্ঘ ভাতা প্রদান
৪। আলিম, ফাযিল ও কামিল মাদরাসায় প্রভাষকদের ১৬ বছর পূর্ণ হলে প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রদান
৫। সরকারি চাকরিজীবীদের ন্যায় শিক্ষকদের মেডিকেল ও বাড়ি ভাড়া প্রদান
৬। বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি প্রথা চালু
৭। সহকারী শিক্ষকদের ৮ম গ্রেড প্রদান
৮। ইএফটি এর মাধ্যমে বেতন প্রদান
৯। প্রশাসনিক পদে জেনারেল শিক্ষকদের নিয়োগ প্রদান
১০। মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করা
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদরাসা খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। যেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খাতে ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, সেখানে কারিগরি ও মাদরাসায় ২টি বিভাগে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। যার কারণে মাদরাসায় শিক্ষায় তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। জাতীয় শিক্ষাক্রম রুপরেখা ২০২১ বাস্তবায়ন ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। এটি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
সংগঠনের মহাসচিব শান্ত ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য সুলতান মাহমুদ, ফখরুল ইসলাম, কে,এম শামিম, মেহেদি হাসান সরকার, ফিরোজ আলম, মো. এলিন তালুকদার, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী, কামরুন্নাহার, কবি সুরুজ্জামন, আব্দুস সাত্তার, শাহ আলম, যুগ্ম-সম্পাদক মেহেদি হাসান, জসিম উদ্দীন, সালেহ উদ্দীন আহম্মেদ মো. মনিরুজ্জান, আজাহার আলী মুক্তা রফিকুল ইসলাম, কামরুজ্জামান প্রমুখ।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৭/০৫/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়