প্রধান শিক্ষক-সহকারী শিক্ষিকার অনৈতিক সম্পর্ক: স্কুলে যাচ্ছে না কোনো শিক্ষার্থী

বগুড়াঃ প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকার অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় গত কয়েক মাস ধরে তুলকালাম কাণ্ড হয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা। বেশ কিছুদিন আগে শিক্ষার্থী বিহীন এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয় এলাকাবাসী। এতে সারাদিন তালাবন্ধ স্কুলে বন্দী থাকতে হয় শিক্ষকদের। এমন কাণ্ডে বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এলাকায়। বিগত কয়েক মাস ধরে চলছে এমন অচলাবস্থা। এর আগেও এই বিদ্যালয়ে দুই শিক্ষক-শিক্ষিকাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার তেকানী চুকাইনগর ইউনিয়নের সরোলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা এটি। গত এক বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামছুজ্জোহা ও সামছুন্নাহারের বিরুদ্ধে এই অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ আনেন বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকরা। স্থানীয়রা জানান, এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে কয়েকটি সালিশ বৈঠক করা হলেও তাদের সম্পর্কের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। তারা জানান, ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি।

গত ১৭ তারিখ রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীও উপস্থিত নেই। পরদিন ১৮ তারিখ অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামসুজ্জোহা ও সহকারী শিক্ষক সামসুন্নাহারসহ অন্য দুই সহকারী শিক্ষক নাসরিন সুলতানা ও আবু তাহের বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। সারাদিন অবরুদ্ধ হয়ে থাকতে হয় তাদের।

এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষিকা সামসুন্নাহার বলেন, ইতঃপূর্বে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসে আমাদের পাঁচ দিনের ছুটি দিয়েছিলেন এবং অন্যত্র বদলি করে দিবেন বলেও কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো তা করা হয়নি। আমারও ইচ্ছা নেই এ বিদ্যালয়ে আসি। কিন্তু না এসে উপায় কী?

শিক্ষিকা সামসুন্নাহার আরো বলেন, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ করব দ্রুত আমাকে অন্যত্র বদলি করা হোক।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামছুজ্জোহা বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। তারপরেও আমি এই বিদ্যালয়ে আর থাকতে চাই না। অন্য কোনো বিদ্যালয়ে বদলি করে দিলেই বাঁচি। এখানে চাকরি করা আমি এখন নিরাপদ মনে করি না।

সোনাতলা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা এনায়েতুর রহমান বলেন, সরোলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ধর্মকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে ডেপুটেশনে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চৌধুরীর সাথে কথা বলার জন্য মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ও ম্যাসেজ করেও পাওয়া যায়নি।

বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখন জানার পর এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৪/০৯/২০২৩  

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়