পুঠিয়ায় বিদ্যালয় সংস্কারে অর্থ নয়ছয় প্রধান শিক্ষক-সভাপতির

রাজশাহীঃ  জেলার পুঠিয়ায় প্রতিবছর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সংস্কার ও মেরামতের নামে ধাপে ধাপে টাকা বরাদ্দ হয়ে থাকে। ওই টাকায় সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং স্থানীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধানরা প্রতিষ্ঠানে সামান্য কাজ করে থাকেন। আর বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। চলতি অর্থবছরে ৪৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কার ও মেরামতের জন্য ২৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আটভাগ, আম ঘোষপাড়া, বানেশ্বর ও বড়বড়িয়া-এই চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ লাখ টাকা করে বরাদ্দ পেয়েছে মেরামত কাজের। আর বাকি ৩৯টি বিদ্যালয় ছোটখাটো কাজের জন্য বরাদ্দ পেয়েছে ৪০ হাজার টাকা করে। বড়বড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার আবুল কাশেম বলেন, প্রতিবছর সরকারিভাবে টাকা বরাদ্দ হয়, তা আমরা শুনি কিন্তু এই টাকা কীভাবে খরচ হয় তা কেউ বুঝতে পারি না। কারণ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং স্থানীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধানরা প্রতিষ্ঠানে সামান্য কাজ দেখায়ে, বাকি টাকা আত্মসাত করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

বানেশ্বর এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক আপেল মাহাবুব বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা প্রতিবছরের সংস্কার ও মেরামতের টাকা আত্মসাৎ করা জন্য বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। সভাপতি হতে পারলে প্রতিবছর একটা টাকা আয় হয়ে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বলেন, বরাদ্দ আসা টাকাগুলো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পরামর্শ করে টাকা খরচ করে থাকেন। কমিটির অন্য সদস্যদের কিছু বলার বা করার থাকে না। তাদেরই কমিটির সদস্য করা হয় যারা প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতির কোনো কাজে প্রতিবাদ করবে না। সংস্কার মেরামতের যা কিছু করা হয়, লোক দেখানো জন্য। আমঘোষপাড়া গ্রামের আ. সামাদ মিয়া বলেন, প্রাথমিকে কয়েক ধাপে সরকারি যে টাকা বরাদ্দ আসে তা সঠিকভাবে খরচ করলে বিদ্যালয়গুলোতে কোনো ছোটখাটো সমস্যা থাকত না। সংস্কার ও মেরামতের কাজগুলোয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ঠিকভাবে তদারকি না করার কারণে বিদ্যালয়ের প্রধান এবং সভাপতিরা নয়ছয় করার সাহস পাচ্ছেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটির সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু বলেন, আমি পদাধিকার বলে কমিটির সভাপতি। কিন্তু প্রাথমিকে কোনো কাজে জবাবদিহির ব্যবস্থা নেই। তাই সংস্কার মেরামতের কাজগুলো সঠিকভাবে হচ্ছে না।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৪/০৬/২০২৩   

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়