পাবনাঃ জেলার সদর উপজেলার দোগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বদলি আদেশের পরও দায়িত্ব না ছাড়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও নতুন ম্যানেজিং কমিটিকে গ্রহণ না করা এবং নানা স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নানা অনিয়মের কারণে দোগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম আমিনুল ইসলামকে পাবনা সদর উপজেলার চর তারাপুরের ভাদুরী ডাঙ্গী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু বদলি আদেশের বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হলেও নতুন কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে দোগাছি বিদ্যালয়েই দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর শিক্ষা অফিস থেকে স্লিপের টাকা আসলেও সেটা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ না করে নিজে আত্মসাত করে আসছেন। শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত পরীক্ষার ফি, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, রুম ঝাড়ু দেয়ার আসবাবপত্রসহ নানা সময়ে শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা উত্তোলনে সেই টাকাও আত্মসাৎ করেন। বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে প্রশংসাপত্র বাবদ ৫০০ করে টাকা নেন তিনি। তারা আরও অভিযোগ করেন, সপ্তাহে দুই-তিন দিন বিদ্যালয়ে এসে হাজিরা খাতায় সাক্ষর করে স্কুল থেকে বেড়িয়ে যান। অন্যান্য শিক্ষকরাও প্রধান শিক্ষককে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে হাজিরা খাতায় সাক্ষর করে চলে যান।
পাবনা সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন সাক্ষরিত একটি কমিটি গত দুই মাস আগে অনুমোদন করা হলেও তিনি বর্তমান কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তার মনপুত লোককে সভাপতি করতে তিনি নতুন কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গড়িমসি করছেন।
বিদ্যালয়ের সদ্যবিদায়ী সভাপতি আসলাম হোসেন বলেন, আমি তার সঙ্গে তিন বছর থেকেছি কিন্তু তাকে মানুষ করতে পারলাম না। স্কুলে তো উনি ঠিকমত আসেনই না দুএকদিন এসে সাক্ষর করে বিদ্যালয় থেকে বেড়িয়ে যান। অনিয়ম-দুর্নীতির ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে তিনি স্কুল পরিচালনা করে আসছেন। আমি নিজে তাকে একটি ফটোকপির মেশিন কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু সেটি তিনি বাড়িতে নিয়ে গেছেন। অফিস রুমে বা শ্রেণিকক্ষে নতুন ফ্যান লাগানো হলে তিনি সেটি খুলে বাড়িতে নিয়ে যান। সম্প্রতি তার বদলির আদেশ হলেও এখানে অফিস করেন। আসলে এখানে কি এতো মধু আছে যে বদলির পরেও থাকতে হবে?। তার মনপুত না হওয়ায় বর্তমান নতুন কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। উন্নয়নমূলক কাজের জন্য উপজেলা থেকে টাকা বরাদ্দ দিলেও সেগুলো তিনি আত্মসাত করেন। সব কিছুর তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক একেএম আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে আর কি করা। বর্তমানে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছি। আগামী সপ্তাহে এখান থেকে ভাদুরী ডাঙ্গী স্কুলে চলে যাবো। অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ফোন কেটে দেন।
পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, আমি মাত্র কয়েকদিন এখানে যোগদান করেছি। আমি শুনেছি যে তার বদলির আদেশ হয়েছে। তবে নতুন আসাতে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে তেমন জানি না। ম্যানেজিং কমিটিকে কেন দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন না সে বিষয়ে উপজেলা অফিসে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৪/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়