পাঁচ পদে সভাপতি-প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ বাণিজ্য!

ময়মনসিংহঃ জেলার ধোবাউড়ায় কৃষ্ণপুর বহুমূখি উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঁচটি পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দুলাল মিয়ার যোগসাজশে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম আজম।

ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান এবং সাবেক একাধিক সদস্য সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক তার ছেলে এবং পরিবারের সদস্যকে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। একই পথে হাটছেন সভাপতিও। তার ভাইসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়োগের চেষ্টা করছেন তিনি। গোপনে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অর্থ বানিজ্যের মাধ্যমে এসব নিয়োগের পাঁয়তারা চলছে। অনিয়মের কারণে চতুর্থ দফা বিজ্ঞপ্তি দিয়েও নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করতে পারছেন না প্রধান শিক্ষক। বিজ্ঞপ্তি গোপন করায় কোনো প্রার্থী আবেদন করছেন না। এক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক নিজের পরিবারের সদস্যদের দিয়ে ভ‚য়া আবেদন করিয়েছেন। নিরাপত্তাকর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রীকে দিয়ে আবেদন করেছেন। এটা হাস্যকর বলে অভিযোগ করেন কমিটির বর্তমান এবং সাবেক একাধিক সদস্য।

আরো জানা গেছে, কৃষ্ণপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, আয়া, নিরাপত্তাকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী এই পাঁচটি পদে নিয়োগের জন্য গোপনে বিজ্ঞপ্তি দেন প্রধান শিক্ষক। কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে ৩জন, অফিস সহায়ক পদে ৬জন, আয়া পদে ৬জন, নিরাপত্তাকর্মী পদে চারজন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে ৮জনের আবেদন জমা হয়েছে। আবেদনগুলোর মধ্যে যাকে নেওয়া হবে সে ব্যাতিত প্রায় সবগুলো শুধু ফরমালিটি হিসেবে আবেদন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম তার আত্বীয় স্বজন দিয়ে আবেদন করিয়েছেন। নিরাপত্তাকর্মী পদে আবেদন করেছেন রনসিংহপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল আলম।

এ ব্যাপারে নুরুল আলম এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন।

পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মাহতাব উদ্দিনের মেয়ে কবি নজরুল বিশ্ব বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রীর আবেদন করা হয়েছে।সহকারী শিক্ষক মাহতাব উদ্দিন জানান, তিনি বা তার মেয়ে জানেন না এই আবেদনের কথা। এভাবে ভূয়া আবেদন করে গোপনে নিয়োগ বানিজ্য চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিটি পদে কমপক্ষে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা বানিজ্য করা হচ্ছে। কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, আয়া, নিরাপত্তাকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী এই পাঁচটি পদে স্কুল কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ প্রধান শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির হাতে নিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এই সুবাধে লক্ষ লক্ষ টাকা অর্থ বানিজ্য করা হচ্ছে।

কৃষ্ণপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ভূয়া আবেদন না তবে কেউ হয়তো সাপোর্টিং আবেদন করেছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ঝামেলা হচ্ছে। অর্থ লেনদেনের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।

ধোবাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম আজম বলেন, কৃষ্ণপুর স্কুলে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে আমাকে কিছু জানায়নি এবং আমি কিছু জানিনা। তবে বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/১১/২০২৩ 

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়