ঢাকাঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা না দিয়েও উত্তীর্ণ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের। তাদের দাবি পরীক্ষাকেন্দ্রে অনুপস্থিত থেকেও চূড়ান্ত মেধাক্রমে ৫০৩১৫ রোলধারী প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং তদন্ত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন সংক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের পক্ষে উপাচার্যের কাছে পাঠানো এক স্মারকলিপিতে এসব অভিযোগ করা হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল গত ২১ অক্টোবর রাত ৮টার পরে প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষা ও ফলাফলের বিষয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম তদন্ত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান পরীক্ষার্থীরা।
অভিযোগের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পরীক্ষার্থী বলেন, আমাদের সব অভিযোগ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে। অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথাগুলো পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রত্যেক চিকিৎসকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। এই অনিয়মের সঙ্গে কারা জড়িত সে বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কারও বিরুদ্ধে আমরা চাইলেই আঙুল তুলতে পারি না।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ প্রসঙ্গে তারা বলেন, মেডিকেলে কে কত মেধাবী একাডেমিক ও পেশাগত জীবন সম্পর্কে সম-ব্যাচের সবাই কমবেশি ধারণা রাখে। অথচ পড়াশোনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না থেকেও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এটা অবশ্যই সন্দেহজনক। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণেই পড়াশোনায় ছিল না এমন অনেকে চান্স পেয়েছে। তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্মারকলিপির কপিতে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩৭ জন চিকিৎসক পরীক্ষার্থী স্বাক্ষর করেছেন। তারা স্মারকলিপিতে ১০টি অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে-নিয়োগ কমিটি করা হলেও সুষ্ঠু পরীক্ষার জন্য এক্সামিনেশন কমিটি করা হয়নি। নিয়োগ কমিটির সভাপতির কাছ থেকেই প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে।
শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রশ্ন কন্ট্রোলার অফিসে জমা দেওয়া এবং ভল্টে সিলগালা থাকার কথা। কিন্তু এ পরীক্ষায় প্রশ্ন কন্ট্রোলার অফিসে জমা না দিয়ে নিয়োগ কমিটির সভাপতি উপ-উপাচার্যের কাছে জমা হয়েছে। সেখান থেকেই কিছু অসাধু শিক্ষক তা অর্থের বিনিময়ে ফাঁস করেন।
যে প্রশ্নগুলো থেকে প্রশ্নপত্র সেট করা হয়েছে সেই প্রশ্নগুলো মডারেশনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গ অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন প্রার্থীদের কাছে প্রশ্ন বিক্রি করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ উত্তীর্ণ হওয়া কিছু প্রার্থীর আগের একাডেমিক ফলাফল যথেষ্ট সন্দেহের সৃষ্টি করে। ফলাফল প্রকাশে কালবিলম্ব যথেষ্ট সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। অফলাইনে সব যোগ্য প্রার্থীর প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি। এমনকি অনলাইনে আবেদনের কথা বলা হলেও অফলাইনেও আবেদন গ্রহণ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে জানা গেছে, ৫০৩১৫ রোলধারী পরীক্ষা কেন্দ্রে অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও ফলাফলে ওই প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। সূত্র; যুগান্তর
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৭/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়