কয়েকজন মেধাবী শিক্ষার্থী দুঃখ প্রকাশ করে বলে, কষ্ট করে পড়া লেখা করে কী হবে? অমুকে ৬ষ্ঠ থেকে দশম নির্বাচনী পরীক্ষায় কখনও সন্তোষজনক ফলাফল করতে পারেনি।
কিন্তু এসএসসি পরীক্ষায় সে এ-প্লাস আমিও এ-প্লাস। জিজ্ঞেস করলাম, ‘এটা কীভাবে হলো?’ বলল, ‘শিক্ষকরা হলে ঢুকে ইংরেজি গ্রামারের সব উত্তর বলে দেয় এবং হলের সকল পরীক্ষার্থী সেগুলো খাতায় তুলে। এখানে ভালো মন্দের বিচার নাই। যেগুলো আমাদের মুখস্ত করতে হয়, সেগুলোও বইয়ের পাতা কেটে অথবা অন্য কোনো উপায় আমাদের সরবরাহ করা হয়!
আমরা দেখে দেখে খাতায় তুলে দেই। শুধু ইংরেজি না, গণিত, বাংলাসহ অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রেও একইভাবে বলে দেওয়া হয়।’ দীর্ঘদিন শিক্ষকতা জীবনে দেখেছি, আগে মেধাবী শিক্ষার্থীরা ইংরেজি গ্রামার শিখতে চাইতো, জানতে চাইতো, বুঝতে চাইতো। এখন মেধাবীরা বলে কষ্ট করে শেখার দরকার কী?
পরীক্ষার হলে তো শিক্ষকরা বলেই দেবেন। তবে দুই একজন শিক্ষার্থী আছে যারা নিজের ইচ্ছায় শিখতে চায়। এদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। এই অবস্থা চলতে থাকলে সে দিন বেশি দূরে নয় যে, বাংলাদেশে দক্ষ-শিক্ষকের প্রচন্ড অভাব দেখা দেবে। কারণ, যারা এসএসসি, এইচএসসি পাস করে তাদের ৯০% এর বেসিক এত দুর্বল যে, তাদের ছয় মাস, এক বছর ট্রেনিং দিয়েও যোগ্য করা যাবে না।
কাজেই এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার হলে অবাধে নকল বন্ধ করার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মেধাবীরা যেন বলে পড়লে এ প্লাস না পড়লে ফেল। তারা যেন আরও বলে, আমরা পড়তে চাই, জানতে চাই, শিখতে চাই।
মো. আতিকুর রহমান খান
সাবেক প্রধান শিক্ষক, উজান গোবিন্দী বিনাইরচর উচ্চ বিদ্যালয়, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ।