মো. নূরুল আমিন
প্রধান শিক্ষক, চিড়িয়াখানা-বোটানিক্যাল গার্ডেন উচ্চবিদ্যালয়, মিরপুর, ঢাকা
অধ্যায়-বায়ু
প্রশ্ন : রিসাইকেল প্রক্রিয়া কীভাবে বায়ুদূষণ কমাতে পারে?
উত্তর : রিসাইকেল শব্দের অর্থ পুনরায় চক্রাকারে ব্যবহার করা। আমরা বিভিন্ন জিনিস রিসাইকেল করে বায়ুদূষণ কমাতে পারি। যেমন-
* বিভিন্ন ধরনের পচনশীল ময়লা-আবর্জনা রাস্তাঘাটে এদিক-সেদিকি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখলে তা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। বায়ু দূষিত হয়। পরিবেশ নোংরা হয়। এসব ময়লা-আবর্জনা মাটি চাপা দিয়ে পরিবেশবান্ধব জৈবসার তৈরি করে জমির উর্বরতা ও ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে পরিবেশ তথা বায়ু দূষণমুক্ত রাখতে পারি।
* ময়লা-আবর্জনা দিয়ে বায়ো প্লান্টের মাধ্যমে গ্যাস ও বিদ্যুতের মতো জ্বালানি তৈরি করতে পারি ও বায়ুকে দূষণমুক্ত করতে পারি।
* বিভিন্ন কাগজ বা ব্যবহৃত খেলনা ব্যবহারের পর তা ডাস্টবিনে না ফেলে রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পুনরায় তা ব্যবহার করতে পারি।
* ফেলে দেওয়া বিভিন্ন বস্তু থেকে সুন্দর সুন্দর শো-পিস বানিয়ে বায়ুদূষণ রোধ করতে পারি।
সুতরাং, রি-সাইকেলিংয়ের মাধ্যমে বায়ুদূষণ কমাতে পারি।
প্রশ্ন : কী কী কারণে বায়ু দূষিত হয়? মানুষ কীভাবে বায়ুদূষণ করছে?
উত্তর : বায়ু আমাদের জন্য খুব দরকারি। বায়ুর স্বাভাবিক উপাদান পরিবর্তন হওয়াকে বায়ুদূষণ বলে।
* বিভিন্ন ধরনের পদার্থ মেযন- রাসায়নিক পদার্থ, গ্যাস, ধূলিকণা, ধোঁয়া অথবা দুর্গন্ধ বায়ুতে মিশে বায়ু দূষিত করে।
* প্রাকৃতিক বিভিন্ন কারণে যেমন- আগ্নেয়গিরি, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি নানা কারণে বায়ু দূষিত হয়।
মানবসৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ডও বায়ুকে দূষিত করে। যেমন-
* জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ু দূষিত হয়।
কলকারখানা ও যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া বাতাসকে দূষিত করে।
* গাছপালা পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন ধোঁয়া থেকেও বায়ু দূষিত হয়।
* যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও মলমূত্র ত্যাগের কারণে বায়ুতে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং বায়ু দূষিত হয়।
* যেখানে-সেখানে কফ, থুথু ফেললে এবং পায়খানা-প্রস্রাব করলে রোগ-জীবাণু বায়ুতে মিশে বায়ুকে দূষিত করে।
* যেখানে-সেখানে আবর্জনা ও মৃত জীবজন্তু ফেললে এগুলো পচে দুর্গন্ধ ছড়ায় ও বায়ুদূষণ ঘটায়।
* চামড়ার কারখানার দূষিত বর্জ্যরে দুর্গন্ধ বায়ুদূষণ করে।
* রান্নার চুলা, মোটর গাড়ির অব্যবহৃত টায়ার পোড়ানোর ফলে নির্গত ধোঁয়া বায়ুকে দূষিত করে।
* গাছপালা, বন-বাদাড় কাটার ফলে বায়ুতে কার্বন ডাই-অক্সাইড বৃদ্ধি পায় ও বায়ু দূষিত হয়।
সুতরাং, মানুষের বেশ কিছু অসচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডই পরিবেশে বায়ুদূষণের মূল কারণ। মানুষ প্রতিনিয়ত নানাভাবে বায়ুদূষণ করেই চলেছে।
পদার্থ ও শক্তি
প্রশ্ন : শক্তির ৫টি রূপের নাম লিখ।
উত্তর : কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। শক্তির বিভিন্ন রূপ রয়েছে। শক্তির ৫টি রূপের নাম নিচে দেওয়া হলো-
* বিদ্যুৎ শক্তি * আলোক শক্তি * শব্দ শক্তি
* তাপ শক্তি * রাসায়নিক শক্তি
প্রশ্ন : তাপ সঞ্চালনের তিনটি প্রক্রিয়া কী কী?
উত্তর : তাপ সঞ্চালনের তিনটি প্রক্রিয়া। যথা-
* পরিবহণ → কঠিন পদার্থ
* পরিচলন → তরল পদার্থ
* বিকিরণ → বায়বীয় পদার্থ
প্রশ্ন : কীভাবে আলো সঞ্চালিত হয়?
উত্তর : আলো এক প্রকার শক্তি। ইহা আমাদের চোখে দর্শনের অনুভূতি জাগায়। আলো সরল বা সোজা পথে চলে। তবে এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে প্রবেশের সময় আলো একটু বেঁকে প্রবেশ করে।
প্রশ্ন : পরমাণু কী?
উত্তর : পরমাণু : পদার্থের সূক্ষ্ম কণাই হলো পরমাণু। ইহা প্রতিটি পদার্থের মূল গঠন উপাদান।
প্রশ্ন : গিটার বাজানো হলে কোন ধরনের শক্তি উৎপন্ন করে?
উত্তর : গিটার এক ধরনের বাদ্যযন্ত্র। এ বাদ্যযন্ত্র দ্বারা সুর তোলা হয়। তাই গিটার শব্দ শক্তি উৎপন্ন করে।
প্রশ্ন : যখন টিভি চালানো হয় তখন শক্তির কী কী রূপান্তর ঘটে?
উত্তর : টিভি হচ্ছে আধুনিককালের একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম। ইহা বিনোদনেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। টিভি বিদ্যুৎ বা ব্যাটারির সাহায্যে চলে। জল-বিদ্যুৎ থেকে টারবাইনের মাধ্যমে বা সূর্য থেকে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বা বায়ু থেকে টারবাইন ঘুরিয়ে বায়ুকলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। আবার ব্যাটারিতে রাসায়নিক পদার্থ থেকে বিদ্যুৎ তৈরি হয়। আবার নানা উৎস থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ দিয়ে টিভি চলে। টিভিতে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ শক্তি, তাপ, শব্দ ও আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
সুতরাং টিভিতে বিদ্যুৎ শক্তি আলো ও শব্দ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
বিদ্যুৎ শক্তি→টিভি→ ১. শব্দ শক্তি ২. আলোক শক্তি ৩. তাপ শক্তি
[রেখা চিত্রে টিভিতে শক্তির রূপান্তর]