ন্যায়বিচার পেতে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছি: ফুলপরী

অভিযুক্তদের শাস্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত শনিবার

নিজস্ব প্রতিবেকদ, কুষ্টিয়া; আমার সাথে যা হয়েছে অন্যায় হয়েছে, তার ন্যায়বিচার চাই। আমি ন্যায়বিচার পেতে লড়েছি। আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তা আর কারো সাথে যেনো না হয়। তাদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে, স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হোক। উনারা ক্যাম্পাসে থাকার যোগ্য না। ন্যায়বিচার পেতে আমি মামলার প্রস্তুতি নিয়েছি প্রতিবাদী কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নির্যাতনের শিকার হওয়া মোছা. ফুলপরী খাতুন।

ফুলপরী খাতুন ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘শুনেছিলাম শনিবার জড়িতদের বহিষ্কারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি আমি। তাছাড়া আমি শনিবার ক্যাম্পাসে যাবো। প্রশাসন আমাকে নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছেন। আমি আমার ক্যাম্পাসে পড়াশুনা করব। যে হলে আমার সাথে এ আচরণ করা হয়েছে সে হলে আমি থাকব না। আমি বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকার জন্য হল মাইগ্রেশান করব এবং প্রশাসনের সাথে সার্বিক বিষয়ে কথা বলব।’

এদিকে শিক্ষার্থী নির্যাতনে জড়িত পাঁচ ছাত্রীর বহিষ্কারের বিষয়ে আগামীকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য উধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘শনিবার শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং ডাকা হয়েছে। ওই কমিটির প্রধান উপাচার্য মহোদয়। বহিষ্কারের বিষয়ে শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে হাইকোর্টের নির্দেশার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধান মোতাবেক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র ধারণা করে ভিডিও ধারনের অভিযোগ উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারী ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনা দেশজুড়ে আলোচিত হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উচ্চ আদালত তদন্ত কমিটি গঠন করে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়, হল ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনগুলোতে ঘটনার সত্যতা মিললে হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগ থেকে জড়িত ৫ জন সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসসুম ইসলাম, হালিমা খাতুন ঊর্মি ইসরাত জাহান মিম এবং মোয়াবিয়া জাহানকে হল ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করে।

এছাড়া গত বুধবার উচ্চ আদালতের আদেশে নির্যাতনে জড়িত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসসুম ইসলাম, হালিমা খাতুন ঊর্মি ইসরাত জাহান মিম এবং মোয়াবিয়া জাহানকে সাময়িক বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হল প্রভোস্টকে অব্যাহতি ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরীকে ইবির যেকোনো হলে পছন্দ মত সিট দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। আদেশের পর গত রোববার হল প্রভোস্ট শামসুল আলমকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৪/০৩/২০২৩  

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়