নির্বাচনী প্রচারণা থেকে অব্যাহতি নিলেন শিক্ষক হান্নান

এম এ কাশেম, নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিবেদকঃ জেলার নালিতাবাড়ী মাধ্যমিক শিক্ষক সমবায় সমিতি লিঃ একটি উপজেলা ভিত্তিক শিক্ষকদের আর্থিক কল্যাণকর প্রতিষ্ঠান।প্রায় চারশত শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব করেন সভাপতি, সহ-সভাপতি,সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ ও ৮জন কার্যকরী সদস্যসহ ১২সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি। বিগত কমিটি নির্বাচনে সদস্য পদে বিপুল ভোটে জয় যুক্ত হয়েছিলেন সন্ন্যাসীভিটা উচ্চ বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক এম এ হান্নান।এবার ত্রি বার্ষিক নির্বাচনে সম্পাদক পদে শুরু থেকেই প্রচার প্রচারণা চালিয়েছিলেন এবং শিক্ষকদের সাথে আন্তরিক সম্পর্কও গড়ে তুলেছিলেন গভীর কিন্তু শিক্ষক নির্বাচনে অধিক প্রার্থী থাকায়, শিক্ষকদের মাঝে অধিক দ্বিধাবিভক্তি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে তিনি এ নির্বাচনে প্রচার প্রচারণা থেকে অব্যাহতি নিয়ে আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।

স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো
‘নালিতাবাড়ী মাধ্যমিক শিক্ষক সমবায় সমিতি লিঃ এর সকল সদস্য ও আমার শুভাকাংখীদের প্রতি আমার সালাম রইল। আসসালামু আলাইকুম। আপনারা অবগত আছেন ইতিমধ্যেই সমিতির ত্রিবার্ষিক নির্বাচনের তফসীল ঘোষনা করা হয়েছে। আগামী ০৩/০৬/২০২৩ ইং নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবৎ আমি আপনাদের কাছে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে আপনাদের সমর্থনের প্রত্যাশায় আপনাদের দ্বার প্রান্তে গিয়েছি। আপনাদের সাড়া, আশ্বাস, অনুপ্রেরণা আর ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। আমি আপনাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। আপনারা জানেন ইতিমধ্যেই আমরা সাধারণ সম্পাদক পদে ৪/৫ জন প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। যা বিগত নির্বাচন গুলিতে একই পদে এতগুলো প্রার্থী প্রচারণা করেনি। আমি মনে করি এটা গনতন্ত্রের একটা সৌন্দর্য্য। কিন্ত মাঠপর্যায়ে যে অভিজ্ঞতা পেলাম তা হলো ” শীলে পাটায় ঘষাঘষি মরিচের কাজ শেষ”। শিক্ষকদের ভাষ্যমতে, আপনারা এতগুলি প্রার্থী থাকলে কার পক্ষে যাবো কার শত্রু হবো? আপনারা প্রার্থীর সংখ্যা কমান। আসলে কথাটা সত্য। এতগুলো প্রার্থী থাকলে ভোটারদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তারপর আমি সবার সাথে একে একে যোগাযোগ করেছি বিষয়টা নিয়ে কিন্তু সবাই সবার সিদ্ধান্তে অটল। আসলে সবাই প্রার্থী হিসেবে যোগ্য। যার কাছেই যাই সবাই তাদের স্বপক্ষে যুক্তি দেখায়। অবশেষে আমি আমার প্রার্থীতা নিয়ে যোগ- বিয়োগ হিসেব শুরু করলাম হাজার চেষ্টা করেও হিসেব মিলাতে পারলাম না। তাই আজ থেকে আমার নির্বাচনী প্রচারণার কাজ থেকে অব্যাহতি নিলাম। আমি নিজে কোন পদে নির্বাচন করবোনা এমনকি সভাপতি/ সম্পাদক পদে কারো পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করবোনা। যিনি গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হবেন তাকেই সাদরে গ্রহণ করে নিবো।আমি জানি এ সিদ্ধান্তে অনেকেই কষ্ট পাবে, অনুতপ্ত হবে, রাগ করবে, কেউবা তিরস্কার করবে। একেক জন একেক মতামত প্রকাশ করবেন। আপনারা ভালো- মন্দ যাই মতামত প্রকাশ করবেন সকল মতামতকে আমি সাদরে গ্রহণ করবো। ইচ্ছে থাকলে পদ পদবী ছাড়াও শিক্ষকদের সেবা করা যায় তাই আমি একজন নেতা নয়,কর্মী হিসেবে আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকতে চাই। আমার কথায়, আচার- আচরণে, নির্বাচনী প্রচারণায়, এমনকি আজকের লিখায় যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন। আমিও আপনাদের জন্য দোয়া করবো। ধন্যবাদ সবাইকে’।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করলে জানা যায়, এম এ হান্নান স্যার একজন শিক্ষক বান্ধব নেতা। তিনি শিক্ষকদের অসুবিধার কথা শুনলেই দৌড়ে দ্রুত শিক্ষকের পাশে দাঁড়ান।শিক্ষকদের অসুস্থের কথা শুনলেই তিনি ঢাকা,কিশোরগঞ্জ ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর এবং কি নালিতাবাড়ী হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ছুটে যেতেন। এছাড়া করোনাকালীন সময়ে শিক্ষকদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছেন,পাশে ছিলেন। এছাড়া শুধু শিক্ষকদের পাশেই থাকেন না, কর্মচারীরাও বাদ পড়ে না তার নজর থেকে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বিভিন্নসময় খোঁজখবর নেন। বিগত ঈদুল ফিতরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের মাঝে শাড়ি, লুঙ্গি এবং নগদ অর্থও প্রদান করেন।

হঠাৎ নির্বাচনী প্রচারণা থেকে অব্যাহতি নেওয়ায় প্রার্থীর ভক্ত শিক্ষকরা প্রাথমিক ধাপে মানসিকভাবেও মেনে নিতে পারছে না বলে জানা যায়।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৪/০৫/২০২৩ 

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তা’য়