নিয়োগ দিতে না পেরে ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন শিক্ষা কর্মকর্তা!

হবিগঞ্জঃ নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন জেলার মাধবপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন। এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর ২৯ ডিসেম্বর উপজেলার জগদীশপুর যোগেশ চন্দ্র হাইস্কুল এণ্ড কলেজে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নৈশ প্রহরী ও আয়া নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ওই নিয়োগে মাসুমা নামে এক নারীকে আয়া পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে তার নিকট থেকে ৮০ হাজার টাকা নেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন। আর এসব লেনদেনে সহায়তা করেন শাহজাহানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছানোয়ার মো. রেজাউল করিম। চুক্তি মতো প্রশ্নপত্র ফাঁস করে মাসুমাকে পরীক্ষায় পাশ করালেও নিয়োগ নিশ্চিত করতে পারেননি আবুল হোসেন। দীর্ঘদিন টাকা আটকে রাখার পর ওই নারীর স্বামী আবুল কাশেমের চাপের মুখে ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেন শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হেসেন।

রবিবার (৮ অক্টোবর) আবুল কাশেমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসের একটি সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন আবুল হোসেন। যোগদানের পর থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতিকে আকড়ে ধরে অর্থ কামাইয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। অফিস করেন নিজের ইচ্ছে মতো। ছুটি না নিয়ে রাজধানী ঢাকায় দিনের পর দিন অবস্থান করা, স্কুল অডিটে না গিয়ে ভুয়া বিল ভাউচারে টিএ ডিএ উত্তোলন, শিক্ষকদের কাছ থেকে তেল খরচের টাকা আদায় করেন। এছাড়া শিক্ষকদের এমপিওভূক্তিকরণ, এনটিআরসি (বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন) নিয়োগধারী শিক্ষকদের বেতন ভাতা সংযুক্তির ক্ষেত্রে টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সূত্র জানায়, শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেনের এসব কর্মকাণ্ডে শাহজাহানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছানোয়ার মো. রেজাউল করিমসহ আরও কয়েকজনের সমন্বয়ে রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। যাদের মাধ্যমে অর্থের আদান প্রদান হয়ে থাকে। শিক্ষা কর্মকর্তা ও তার অনিয়মে সহায়তাকারী সিন্ডিকেটের যন্ত্রণায় উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন টাকা ফেরতের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি স্বচ্ছতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করতে পারবো না। চাকরির প্রলোভনে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে ৭০ হাজার ফেরতের দেওয়ার প্রশ্ন করার সাথে সাথে তিনি প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমকে মোবাইলে কল দিয়ে বিকালে উপজেলায় এসে দেখা করতে বলেন।

এদিকে ঘুষের টাকার লেনদেনে সহায়তা এবং ফেরত দেয়ার বিষয়ে শিক্ষক ছানোয়ার মো. রেজাউল করিম অস্বীকার করে শিক্ষা কর্মকর্তার সাফাই গেয়েছেন।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৯/১০/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়