নিয়োগে ঘুষ দেওয়ার কথা জানাল প্রার্থী, ফল স্থগিত

ঢাকাঃ উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পেইড পিয়ার ভলান্টিয়ার (পিপিভি) নিয়োগ পরীক্ষার ফল স্থগিত করা হয়েছে। গত বুধবার গঙ্গাচড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৌখিক পরীক্ষা হয়। পরে উৎকোচ নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে ফল প্রকাশের দিন গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব মেডিকেল অফিসার (এমসিএইচ-এফপি) ডা. রিফাত আরা খান স্বাক্ষরিত ওই ফল স্থগিত করা হয়। অনিবার্য কারণে সর্বসম্মতিক্রমে ফল স্থগিত করা হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

জানা গেছে, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরাধীন, ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসের ডেলিভারি প্রোগ্রাম (সিসিএসডিপি) অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় গঙ্গাচড়া উপজেলায় ‘কাজ নাই, ভাতা নাই’ ভিত্তিতে এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এক মাসের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে ২৩ জন পিপিভি নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে গত ১৩ মে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। দৈনিক কাজের বিনিময়ে ভাতা হিসেবে ৩০০ এবং নাশতার ১০০ টাকা পাবে তারা। এতে ৯৪ জন প্রার্থী আবেদন করেন। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয় ২৩ ও ২৪ মে। এ পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন।

নিয়োগ কমিটির সহসভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না বলেন, ‘গত বুধবার মৌখিক নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার সময়ে এক প্রার্থীকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল নিয়োগের জন্য কাউকে কোনো টাকা দিতে হয়েছে কি না? সে বলে ৫০ হাজার টাকা আমার বাবা উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিনকে দিয়েছেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান কিছুটা সময় লজ্জায় মাথা নিচু করেছিলেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান সবার সামনে প্রার্থীর বাবা ও তার স্বামীকে ফোন দেন। তারা ফোনে টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।’

টাকা লেনদেনের কারণে ফল স্থগিত করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘টাকা নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ করা কঠিন। কিন্তু সে কারণে ফল স্থগিত করা হয়নি। নিয়োগে কিছু ত্রুটি থাকায় ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ওই ফল স্থগিত করা হয়েছে।’ ইউএনও আরও বলেন, ‘ওই প্রার্থীর অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি একজন স্বচ্ছ জনপ্রতিনিধি। আমি কখনই কারও কাছ থেকে এক টাকাও নিই না। টাকা নেওয়ার বিষয়ে মেয়েটি ভাইভা বোর্ডে আমার নাম বলেছে, কিন্তু সে আমাকে চেনে না। কখনো দেখেওনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘হয়তো আমার নাম ভাঙিয়ে কেউ টাকা নিতে পারেন। আমি বিষয়টি জানার জন্য তাৎক্ষণিক নিয়োগ কমিটির সদস্যদের সামনে থেকে মেয়েটির বাবা ও তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তারা টাকা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। ওই সময়ে আমি ফোনে লাউড স্পিকার দিয়েছিলাম। সেই মেয়েটির বাবা ও স্বামীর কথা কমিটির সদস্যরাও শুনেছেন।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ডা. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৭/০৫/২০২৩          

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়