নিজেকে নিবেদিত শিক্ষক দাবি করা প্রধান শিক্ষকের সনদ জাল

করছেন ২৪ বছর ধরে শিক্ষকতা

গোপালগঞ্জঃ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার কৃষ্ণাদিয়া বাগুমৃধা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে জাল সনদ ও অভিজ্ঞতা ছাড়া ২৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও বিদ্যালয় মাঠে বালু ভরাট, গাছ বিক্রি, গেট নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফি আদায় করে বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে টাকা না রেখে নিজ হিসাবে জমা রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

একই সঙ্গে তার স্ত্রীকে অবৈধভাবে বিদ্যালয়ের সহকারী লাইব্রেরিয়ান হিসাবে যোগদানের অভিযোগ, বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অনিয়মের কারণে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।

নিজেকে নিবেদিত শিক্ষক দাবি করা গোলাম মাওলা বিভিন্ন সময় শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সৎ মানুষ হওয়ার উপদেশ দেন। পরিচয় দেন আদর্শ একজন শিক্ষক হিসেবে। অথচ জাল সনদে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ২৪ বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি করছেন তিনি। সম্প্রতি এই অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাউশি অধিদপ্তর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং তার বিরুদ্ধে এসব অনিয়মের তদন্ত বিভিন্ন দপ্তরে চলমান রয়েছে। এর আগে জাল সনদে চাকরি নেওয়ার পরে ২০০০ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ তথ্য জানানো হয় জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিস, দুর্নীতি দমন কমিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরসহ বিভিন্ন সংস্থায়।

জানা গেছে, জাল জালিয়াতি করে প্রধান শিক্ষক হওয়া গোলাম মাওলা ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দা। ১৯৯৯ সালে তিনি কৃষ্ণাদিয়া বাগুমৃধা উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন প্রধান শিক্ষক হিসাবে। তার ইনডেক্স নম্বর আছে। প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে গোপন কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই বছরে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা ছাড়াই বিএড শিক্ষার জাল সনদে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হন। এ সময় যেসব সনদ তিনি দিয়েছেন এতে দেখা যায়, এসএসসিতে দ্বিতীয়, এইচএসসিতে তৃতীয়, বিএ পরীক্ষা এবং বিএড দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

এসব সনদ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, গোলাম মাওলা বিএ পাস করলেও বিএড পাস করেননি। পরীক্ষা দিয়েছিলেন তবে তিনি পাস করতে পারেননি। তিনি বিএড পাশ করেছেন ১৯৯১ সালে, প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেছেন ১৯৯৯ সালে আর বিএড পাশের সার্টিফিকেট তুলেছেন ২০০৯ সালে। তাহলে তিনি চাকরিতে যোগদান করলেন কোনো সার্টিফিকেট দিয়ে। এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন প্রভিশনাল সার্টিফিকেট দিয়ে যোগদান করেছিলেন, কিন্তু প্রভিশনাল সার্টিফিকেটের কোনো ফটোকপিও তিনি দেখাতে পারেননি।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৬/১০/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়