নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভারঃ ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার ৮ বছরের মাদরাসা শিক্ষার্থী তানভীর আহম্মেদকে অপহরণ ও হত্যার মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান। এর আগে বুধবার আশুলিয়া থানাধীন টংগাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি ও হত্যার মূলহোতা আনোয়ারসহ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. আনোয়ার হোসেন (২০), আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি এলাকার বিল্লাল মাদবরের বাড়ির ভাড়াটিয়া শরিয়তপুর জেলার গোসাইরহাট এলাকার কসাই হুমায়ুন কবিরের ছেলে সাকিব হোসেন (২৬) ও তামজিদ আহমেদ ওরফে রাফি (১৪)। তারা সকলেই ঢাকা জেলার বাসিন্দা।
র্যাব জানায়, গত ০৭ মার্চ শবেবরাতের রাতে সাভারের আশুলিয়া থানাধীন টংগাবাড়ী এলাকায় থেকে মাদরাসাপড়ুয়া ৮ বছরের শিশু তানভীরকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। পরের দিন অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি শিশুটির বাবার মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ দাবিসহ হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় নিখোঁজ শিশুটির বাবা আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এবং র্যাবে অভিযোগ করেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত নানা সংবাদ আমলে নিয়ে র্যাবের একটি গোয়েন্দা দল ঘটনাটির ছায়া তদন্তের পাশাপাশি অপহরলকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। এরই মধ্যে আশুলিয়া থানাধীন টংগীবাড়ী এলাকায় একটি বস্তাবন্দি শিশুর লাশ দেখতে পেয়ে থানায় অবহিত করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব-৪ এর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজ শিশু তানভির আহম্মেদের লাশ শনাক্ত ও হত্যায় জড়িতদের সম্পর্কে সুনিশ্চিত হয়ে মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি ও হত্যার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, শিশুটির পরিবার ও হত্যাকারীরা একই এলাকায় বসবাস করার সুবাদে পূর্ব পরিচিত। এ ছাড়া হত্যার মূলহোতা আনোয়ার হোসেনের সাথে শিশুটির পিতার দীর্ঘদিন ধরে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ চলছিল। একপর্যায়ে সোলায়মান টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আনোয়ারকে অপমান করলে তিনি প্রতিশোধ নিতে তার শিশু পুত্র তানভিরকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে।
তিনি আরও বলেন, গত ০৭ মার্চ রাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি আনোয়ার তানভিরকে সুকৌশলে তার পিতার সদ্য কেনা জমি দেখানোর কথা বলে আশুলিয়া থানাধীন শ্রীখন্ডিয়া এলাকায় রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে হত্যা করে লাশটি সেখানেই ফেলে রাখে। ০৮ মার্চ ভোরে হত্যাকারীরা ভুক্তভোগী শিশুটির লাশ গুম ও হত্যার প্রমাণ লুকানোর জন্য একটি বস্তায় ভরে লাশটি সবজির গাড়িতে করে আশুলিয়ার টংগাবাড়ী এলাকায় রাস্তার পাশে ময়লার ড্রেনে ফেলে দেয়।