শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ
নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি আট দিন বাড়িয়ে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ ০এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে নারী শ্রমিকরা মাতৃত্বকালীন ছুটি পেতেন ১৬ সপ্তাহ (১১২ দিন)। এটি তিনি মা হওয়ার আগে ও পরে মিলিয়ে পেতেন। এখন এটি পরিবর্তন করে নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২০ দিন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ছুটি আট দিন বাড়ানো হয়েছে। সে সাথে এ ছুটি নারী শ্রমিক তার সুবিধা মতো সময়ে নিতে পারবেন। শ্রম আইন যেখানে প্রযোজ্য তাদের জন্য এ মাতৃত্বকালীন ছুটি। স্ব বেতনে সুবিধা মতো ছুটি নিতে পারবেন। তিনি বলেন, এ ছুটি তিনি (নারী শ্রমিক) মা হওয়ার আগেও নিতে পারবেন, পরেও নিতে পারেন। এটি তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে। হতে পারে বাচ্চা হওয়ার দুই বা তিন সপ্তাহ আগে থেকে নিয়ে বাকিটা কাটাবেন। অথবা তিনি আগেও নিতে পারেন, পরে নাও নিতে পারেন। এটি তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে। মাতৃত্বকালীন ১২০ দিনের যে ছুটি পাবেন, তা বেতনসহ। মূল আইনেই বলা হয়েছে বেতনসহ। এটি মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা করে করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে আইনে ছিল ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে ২০ শতাংশ শ্রমিকের স্বাক্ষর যুক্ত বা তাদের সমর্থনসহ আবেদন না করলে ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারতেন না। সেটিকে এখন ভাগ করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে শ্রমিকের সংখ্যা যদি তিন হাজারের কম হয়, তাহলে ২০ শতাংশই থাকবে। আর তিন হাজারের বেশি হলে ১৫ শতাংশ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন এবং তারা যদি সে অনুযায়ী আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেন, তাহলে সেখানে তারা করতে পারবেন।
মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩ মাস আগে সিটি নির্বাচন : মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাস নয়, ৩ মাস আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচন দিতে হবে। এমন বিধান রেখে ‘স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: মাহবুব হোসেন বলেন, যেদিন সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হবে তার আগের ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে হতো। এখন সেটিকে বদলে তিন মাস করা হচ্ছে, ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। শপথ নেয়ার ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রথম সভা করতে হবে। সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলদের বছরে ছুটি তিন মাস থেকে কমিয়ে এক মাস করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো কাউন্সিলর অনুপস্থিত থাকলে পাশের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দায়িত্বে থাকতেন। এখন সেটিকে বদলে সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর দায়িত্বে থাকবেন সেই বিধান করা হচ্ছে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের সচিবের পদটি বদলে নির্বাহী কর্মকর্তা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ওয়াসার কাছ থেকে সিটি করপোরেশনের কাছে দেয়া হয়েছে। ওয়াসার কাছ থেকে এই দায়িত্ব চুক্তি করে আগেই সিটি করপোরেশনকে দেয়া হয়েছিল। সিটি করপোরেশনের মধ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন বা প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানাধীন রাস্তা, পুকুর বা ডোবা থাকলে সেগুলো যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা না হয়, তাহলে নির্দেশ দেয়া যাবে। নির্দেশনা না মানলে জরিমানা করা যাবে- বিষয়টি আইনে যুক্ত করা হচ্ছে, জানান তিনি।
মেয়াদোত্তীর্ণ ইউপিতেও বসবে প্রশাসক : পৌরসভা ও জেলা পরিষদের মতো মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিয়ন পরিষদেও (ইউপি) প্রশাসক বসানো যাবে- এমন বিধান রেখে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সংশোধিত খসড়া আইন অনুযায়ী, ‘ইউনিয়ন পরিষদ সচিব’র পদবি বদলে হচ্ছে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা’।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে নতুন চেয়ারম্যান না পাওয়া পর্যন্ত সরকার প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে, আইনে এমন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ভাতা পান। কিন্তু তারা যখন দায়িত্বে থাকেন না তখন ভাতা পাবেন কি না আইনে তা স্পষ্টভাবে বলা ছিল না। সংশোধন করা আইনে বলা হয়েছে, যখন তারা দায়িত্বে থাকবেন না তখন ভাতা পাবেন না।
সংশোধিত আইন অনুযায়ী, এতদিন গেজেট জারির ৩০ দিনের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যভার গ্রহণ করতে হতো। এখন থেকে শপথের পরে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রথম সভা করতে হবে। নতুন আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ সচিবের পদ পরিবর্তন করে ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা করা হচ্ছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১০/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়