কুমিল্লাঃ জেলার মনোহরগঞ্জে পঞ্চগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজে শ্রেণিকক্ষসহ নানা সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের খোলা জায়গায় পাঠদান দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে খেলার মাঠ, বেঞ্চ সংকট ও লাইব্রেরি না থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। নতুন ভবনের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করলেও কোন উত্তর পাইনি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে বাইশগাঁও ইউপির কেয়ারী গ্রামে ১৯৮৪ সালে পঞ্চগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এক এককর ৬৭ শতাংশের মধ্যে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে। এখানে স্কুল শাখায় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৫২৫ জন, কলেজ শাখায় ২০৯ জন শিক্ষার্থী ও ২৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী আছেন। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা রয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান নরুল ইসলাম, আবদুল মতিন ভুইয়া, আবুল বাশার, হাবিব উল্লাহ ও আবুল হাশেম। এখানে পুরোনো জরাজীর্ণ ১টি টিনের ঘর, যা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সে কক্ষ দুটির টিনের চালা উড়ে গেছে, ধসে গেছে ইটের পিলারও। এছাড়াও লাইব্রেরি কক্ষের টিন উড়ে গেছে। ওই শ্রেণিকক্ষে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির প্রায় ১২৮ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। এখন তারা বাইরের খোলা জায়গায় পড়াশোনা করছে। এদিকে পঞ্চগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং কমিটির অর্থায়নে কলেজ শাখার জন্য ২০১৫-১৬ সালে দ্বিতীয় তলা একটি ভবন নির্মাণ করেন। ভবনে নিচতলা তিনটি শ্রেণিকক্ষে চলছে স্কুল শাখার ক্লাস। দ্বিতীয় তলায় দুইটি শ্রেণিকক্ষে চলছে কলেজ শাখার ক্লাস। অপর আরও একটি কক্ষে রয়েছে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রখর রোদে সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে খোলা আকাশের নিচে ধুলাবালুর মধ্যে ক্লাস করে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বৃষ্টির দিনে বিদ্যালয়ে পাঠদান চালু রাখলে আরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বৃষ্টির দিনে ক্লাস করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থীর বই-খাতা ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। বৃষ্টিতে স্কুলড্রেস ভিজে ঠান্ডা, কাশি, নিউমনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় অনেকেই।
এ বিষয়ে ৭তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাত ভুইয়া বলেন, ঝড়ে তাঁদের শ্রেণিকক্ষ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এভাবে বাইরে লেখাপড়া করতে তাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। ওই শ্রেণির মাইমুনা খাতুন ও সৈকত হোসেন বলেন, ‘আমাদের স্কুলে না আছে বেঞ্চ, না আছে শ্রেণিকক্ষ। রোদে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে কষ্ট হয়।
এ বিষয়ে পঞ্চগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জায়গা পর্যাপ্ত আছে। নতুন ভবন, শ্রেণিকক্ষ ও বেঞ্চ না থাকায় শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মনোহরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, বিদ্যালয়ে একটি ভবন নির্মাণ করা খুবই জরুরি। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করব। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৫/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়