নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে সংসদে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী

ঢাকাঃ নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে অভিযোগ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নোটগাইড ব‌্যবসায়ী ও কোচিং বাণিজ‌্যে জড়িত কিছু শিক্ষক এর সাথে জড়িত। তাদের বাণিজ‌্য বন্ধ হবে এমন আশঙ্কায় তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই এটা করছেন।

রবিবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় সংসদে ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ‌্যালয় বিলের সংশোধনী প্রস্তাবের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বিলের সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর বক্তব‌্যকালে নতুন শিক্ষা ব‌্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা করেন বিরোধী দলের সদস্যরা।

জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমে পরীক্ষা পদ্ধতি রাখা হয়নি বিষয়টি একেবারেই সত‌্য নয়। আগে কেবল ষান্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষা হতো বরং এখন ধারাবাহিক মূল‌্যায়ন হয়। প্রতিদিন শিক্ষার্থী কী শিখছে? সে কেমন করে শিখছে। সক্রিয় অংশগ্রহণ করছে কিনা তার সবকিছু মূল‌্যায়ন হয়।

নতুন যে কোনো কিছু গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক রকম রেজিস্টেন্স থাকে যার কারণে কিছুটা সমস‌্যা হচ্ছে মন্তব‌্য করে মন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ বলছেন গুটি কয়েক অ‌্যাসাইনমেন্ট, গ্রুপ ওয়ার্ক গুগল থেকে দিচ্ছে। কেবল বই নয়, এখন নানারকম সোর্স থেকে শিক্ষার্থীরা তথ‌্য নেবে। সেগুলো নিয়ে গ্রুপ ওয়ার্ক এবং উপস্থাপন করবে।

শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে ডিম ভাজি ও আলু ভাজি করে আনার অভিযোগের ব‌্যাখ‌্যা দিয়ে দীপু মনি বলেন, ডিম ভাজি আলু ভর্তার কথা প্রায়ই বলা হচ্ছে। এটি একেবারেই অপপ্রচার। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১২১টি অধ‌্যায় আছে। এর মধ‌্যে জীবন-জীবিকার একটি অধ‌্যায় হচ্ছে রান্না। সেই রান্নাটি কেন? আমাদের শিক্ষার্থী দেখে বাড়িতে মা কিংবা অন‌্য কোনো একজন রান্না করে। সেই বিষয়টি যে জরুরি সে তা শেখে না। একজন মানুষ যখন রান্না করবে সে রান্নার বিষয়টি চিন্তা করবে। এটি ১২১টি অধ‌্যায়ের মাত্র একটি এবং সারা বছরে একদিন মাত্র বিদ‌্যালয়ে পিকনিক করে রান্নাটা দেখবে। এটা বাড়িতে নয়, যেটা বাড়িতে দেওয়া হচ্ছে সেটা শিক্ষকের না বোঝার ফল। সেজন‌্য শিক্ষকদের বারবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষাক্রম নিয়ে কেউ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন- এমন মন্তব‌্য করে তিনি বলেন, যারা কোচিংয়ে ব‌্যস্ত থাকেন। কোচিং ব‌্যবসারয়ীরা এটাকে বিকৃত করার জন‌্য তারা কিছুটা এটা করেছেন। শহরের কিছু বিদ‌্যালয় এটা করছে। তাদের কড়া নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। বাড়ি থেকে রান্না করে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। যারা করছেন তারা এটা প্রশ্নবিদ্ধ করার জন‌্য করছেন।

তিনি বলেন, আর্টপেপার কিনতে হবে… ব‌্যয়বহুল এটাও না বোঝার ফল। মোটেই আর্টপেপার কিনবার কথা নয়। বাড়ি ‍পুরোনো খবরের কাগজ, ক‌্যালেন্ডার ইত‌্যাদি ব‌্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। এটাও কিছু শিক্ষক ইচ্ছাকৃতভাবে করাচ্ছেন। আর মোরগ পালন মোটেই করতে হবে না। এখানেও একটি বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে।

নতুন শিক্ষাক্রমে ইতোমধ‌্যে ফল পাওয়া শুরু হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের যেটা দরকার শিক্ষার্থীদের থেকে আমরা সেই দক্ষতাটা পাচ্ছি। তারা কিন্তু অনেক কিছু লিখছে। এখন একটা কিছু লিখতে দেন লিখে দিতে পারে। বলতে দেন বলতে পারে। বানিয়ে দিতে বলেন বানিয়ে দিতে পারে বলেও জানান তিনি।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৯/১০/২০২৩

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়