নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন নীতিমালায় পরিবর্তন প্রয়োজন

মো. হাসান উল বারীঃ জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১-এর আলোকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার নতুন পাঠ্যক্রম প্রবর্তন করেছে, যা ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে বাস্তবায়ন হচ্ছে। নতুন শিক্ষাক্রমে শ্রেণি কার্যক্রমকে কীভাবে আরও বেশি আনন্দময় এবং শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক করা যায় তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনকে।

নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন হবে দুই ভাগে। এক ভাগের মূল্যায়ন হবে শ্রেণিকক্ষেই, শিখনকালীন নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। আরেক অংশের মূল্যায়ন সামষ্টিকভাবে। অ্যাসাইনমেন্ট, উপস্থাপন, উৎসবের আয়োজন ইত্যাদি বহুমুখী পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। প্রারম্ভিক শ্রেণিগুলোতে শিখনকালীন মূল্যায়নের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে এবং ধারাবাহিকভাবে উঁচু শ্রেণিতে শিখনকালীন মূল্যায়ন কমিয়ে সামষ্টিক মূল্যায়নের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। শিখনকালীন মূল্যায়ন অনানুষ্ঠানিক ও ধারাবাহিকভাবে সম্পন্ন করা হবে।

শিক্ষাথীর জ্ঞান, আগ্রহ, আচরণ, অংশগ্রহণ, দৃষ্টিভঙ্গি, দক্ষতা, নৈতিকতা, দূরদর্শিতা ইত্যাদি বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল প্রয়োগ করে যোগ্যতাভিত্তিক যে মূল্যায়ন তা শিখনকালীন মূল্যায়ন। বছরজুড়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিখনকালীন মূল্যায়ন চলতে থাকবে। নির্দিষ্ট সময় সমাপ্তিতে শিক্ষার্থীর অগ্রগতি যাচাই করা হলো সামষ্টিক মূল্যায়ন। এ মূল্যায়ন শিক্ষা বছরের মধ্য সময়ে এবং শেষে, দুই বার করা হবে। নির্দিষ্ট সময়ে সামষ্টিক মূল্যায়ন শেষে তার রেকর্ড, তথ্য বা প্রমাণকের ভিত্তিতে শিক্ষক পারদর্শিতার নির্দেশকে তার ইনপুট দেবেন।

এভাবে মূল্যায়নের ফলে এক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পুরোপুরি পড়াশুনা ছেড়ে দিয়েছে। বাসায় স্ব-অধ্যয়ন প্রায় উঠেই গেছে। বাসায় নিয়মিত বাড়ির কাজ দেওয়া অনেকাংশে বন্ধ। এভাবে চলতে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে দেশ মেধাশূন্য জাতিতে পরিণত হবে। তাই সামষ্টিক মূল্যায়নে শুধু পরীক্ষা পদ্ধতি রাখা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট সকলকে বিষয়টি ভাবার জন্য অনুরোধ করা গেল।

লেখক: শিক্ষক