শিক্ষাবার্তা ডেস্ক।।
নতুন শিক্ষাক্রমে এখনো প্রশিক্ষণ পাননি অধিকাংশ শিক্ষক। যারা এক দফায় প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, তাদের অনেকেই শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পড়ানোর ক্ষেত্রে অতটা দক্ষ হয়ে উঠতে পারেননি। ফলে সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষকরাও। প্রতিনিয়ত অভিভাবকদের প্রশ্নে জর্জরিত হলেও দিতে পারছেন না সদুত্তর। শুধু মফস্বল নয়, রাজধানীর নাম করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরও একই দশা।
উইলস স্কুলের একজন শিক্ষক বলেন, ‘কিছুদিন আগে পানিচক্র নিয়ে ক্লাস নিয়েছি। সেখানে পানির উৎস, ব্যবহার বিষয়ে বিস্তারিত শেখানো হয়। পরে তাদের দলগত কাজ দেওয়া হয়। দুদিন পর একাধিক অভিভাবক এসে জানালেন- তাদের সন্তানরা বাসায় এ বিষয়ে কোনো পড়াশোনা করেনি। তাহলে এই অধ্যায়ের ওপর বাচ্চাদের পরীক্ষা হবে কীভাবে? আমি যখন জানালাম- পরীক্ষা হবে না, এটা শিক্ষক মূল্যায়ন করে নম্বর দেবেন, তখন তাদের মধ্যে অন্যরকম এক বিস্ময়! এটা তারা যেন মানতেই পারছেন না। অভিভাবকরা চাইছেন- পরীক্ষা হোক এবং কোন পরীক্ষায় কে, কত নম্বর পেলো, তাও জানতে চান তারা।’
মাধ্যমিক পর্যায়ের একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক দয়াল চন্দ্র পাল । নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অনেক শিক্ষকও যে এখনো পুরোপুরি ‘ওয়াকিবহাল’ নন তা তার কথায়ই ফুটে ওঠে। দয়াল চন্দ্র পাল বলেন, ‘শিক্ষকদের প্রধান সমস্যা হলো মূল্যায়ন বিষয়ে এখনো অনেকের ধারণা স্পষ্ট নয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরও তারা এটা বোঝাতে পারছেন না। এতে অভিভাবকদের উদ্বেগ আরও বাড়ছে। তারা ভাবছেন- নতুন শিক্ষাক্রমে তাদের সন্তান বোধহয় শিক্ষাবঞ্চিত হয়ে বড় হয়ে উঠবে।’
নতুন শিক্ষাক্রম পরীক্ষা ছাড়া- এমনটি নয়। এখানেও অনেক পরীক্ষা আছে, তবে সেটা তিন মাস অন্তর অন্তর নয়। প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক, বার্ষিক পরীক্ষা- এগুলো নেই। বরং প্রতিটি ক্লাসে, প্রতিটি অধ্যায় পড়ানোর সময় শিক্ষার্থীদের মেধা মূল্যায়ন হবে
তবে ভিন্ন মতামতও আছে অনেকের। যেমন, পরীক্ষা একেবারেই যে নেই- এমনটি নয় বলে জানান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক। নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। ‘নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ধোঁয়াশা রয়েছে। তারা এ বিষয়ে এখনো বুঝে উঠতে পারেননি। শিক্ষিত অভিভাবকরাও বুঝতে পারছেন না। সবাই এটাকে জটিল এবং ভুয়া মনে করছেন। আবার অধিকাংশ শিক্ষক এখনো প্রশিক্ষণ না পাওয়ায় তারাও অভিভাবকদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলতে পারছেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম পরীক্ষা ছাড়া- এমনটি নয়। এখানেও অনেক পরীক্ষা আছে, তবে সেটা তিন মাস অন্তর অন্তর নয়। প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক, বার্ষিক পরীক্ষা- এগুলো নেই। বরং প্রতিটি ক্লাসে, প্রতিটি অধ্যায় পড়ানোর সময় শিক্ষার্থীদের মেধা মূল্যায়ন হবে। ধারাবাহিকভাবে তা লিখে রেখে বছর শেষে নম্বর যোগ করে সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। তাই উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়