সিরাজগঞ্জঃ উদ্দেশ্য ছিল শতভাগ শিক্ষকের হাজিরা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষকরা যাতে সময়মতো স্কুলে আসেন তা নিশ্চিত করা। এজন্য ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর স্পিল প্রকল্প থেকে যন্ত্রটি কেনা হয়। বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক মেশিন স্থাপনের পর জেলার তাড়াশ উপজেলার ১৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডিজিটাল হাজিরা বায়োমেট্রিক মেশিন বর্তমানে শোভা পাচ্ছে তবে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো কাজেই আসছে না। এতে সংশ্লিষ্টদের অবহেলা ও নজরদারির অভাবে সরকারি লাখ লাখ টাকা জলে গেছে। ভেস্তে গেছে প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, আমাদের উপজেলাতে ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে পূর্ণ মেশিন সেটআপ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে দেওয়া বিলপত্রে ডিভাইস, ডোমেইন, হোস্টিং, সিম ও বিভিন্ন ইস্যুতে অর্ধেক টাকাই বাজে ব্যয় দেখানো হয়েছে। অথচ বিবরণীর অনেক কিছুই এখনো অনেক বিদ্যালয় বুঝে পায়নি। ইন্টারনেট বাবদ বাৎসরিক চার্জও নেওয়া হয়েছে বিদ্যালয় থেকে। অথচ ইন্টারনেট সংযোগই দেওয়া হয়নি। যা শুভঙ্করের ফাঁকি।
এদিকে তাড়াশ উপজেলার দোবিলা-দেবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ ইউসুফ বলেন, উপজেলার সব স্কুলে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা হয়েছে। কিন্তু বেশিভাগ মেশিনের ব্যাটারি নষ্ট হওয়ায় আপাতত হাজিরা বন্ধ আছে। আর এ অবস্থা শুধু সেখানেই নয়, প্রতিটা স্কুলেই বায়োমেট্রিক মেশিন আছে কিন্তু এর কোনো কার্যকারিতা নেই।
তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আইয়ূবুর রহমান রাজন জানান, আমরা যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক মেশিনটি লাগিয়ে নিয়েছি। তাদের সম্পূর্ণ কাজ শেষ না হতেই করোনা মহামারি আসে। আর তখন সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। তবে প্রথমের দিকে নতুন নতুন যে মেশিন নষ্ট হয়েছিল, তখন সেগুলো পরিবর্তন করে দিলেও এখন ওই প্রতিষ্ঠানের মোবাইল নম্বরটি বন্ধ থাকায় আমরা কোনো যোগাযোগ করতে পারছি না। এতে করে কার্যত বায়োমেট্রিক মেশিনগুলো অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
এ ব্যাপারে বায়োমেট্রিক মেশিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শুভর মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মুসাব্বির হোসেন খান প্রতিদিনের সংবাদকে এ প্রসঙ্গে বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠানের বায়োমেট্রিক মেশিন সচল থাকলেও কিছু বিদ্যালয়ে মেশিনের সমস্যা আছে। আর সফটওয়্যার ইনস্টল করার কথা, সেটা অনেক স্কুলেই করেনি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৪০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়