সুনামগঞ্জঃ জেলার দোয়ারাবাজারে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এক অসহায় শিক্ষক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের প্যাকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহিরুল হক।
গতকাল দুপুরে দোয়ারাবাজার প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. জহিরুল হক স্থানীয় এক পুলিশ সদস্য কর্তৃক হয়রানির অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলাবাজার ইউনিয়নের রামশাইরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের পুত্র খোরশেদ আলম। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য হয়েও দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। তিনি করোনাকালে আমার দ্বিতীয় পুত্র স্বল্পমাত্রার বাক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মো. মমিনুল হক শাওনকে আর্থিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে সবজি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত করেন। এরই সুবাদে উভয়ের মধ্যে আর্থিক লেনদেন হয়। পরবর্তীতে লেনদেন নিয়ে ব্যবসায় সমস্যা সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক সমিতি কর্তৃপক্ষ খোরশেদ আলমের কাছে থাকা শাওনের একটি খালি চেকের পাতা রেখে তাদের হিসাবনিকাশ নিষ্পত্তি করে দেন। আমার পুত্রের দেয়া চেকটি ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও পুলিশ সদস্য খোরশেদ আলম ওই চেকটি আর ফেরত দেননি। চাকরির ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে দেই দিচ্ছি বলে টালবাহানা করতে থাকেন। আমার জানামতে আমার পুত্রের কাছে তিনি কোনো টাকা পয়সা পান না।
এদিকে এর জেরে গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্থানীয় বাংলাবাজারে আমাকে দেখতে পেয়ে খোরশেদ আলম কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোকজন নিয়ে হঠাৎ আমার দিকে তেড়ে আসেন এবং আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে টানাহেঁচড়া করে আমাকে আটকে রাখেন। এ সময় খোরশেদ আলম আমার ছেলের কাছে ৫০ লাখ টাকা পাবেন বলে দাবি করেন এবং আমাকে মারধর করতে উদ্যত হন। দাবিকৃত টাকা না দিলে আমাকে মারধর করবে এমনকি আমার ছেলেকে কখনো পেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। ওই সময় খোরশেদ আলম আমাকে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রাখেন। পরে স্থানীয়রা এসে আমাকে তার কবল থেকে উদ্ধার করে নেন।’
সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি একজন নিরীহ মানুষ। এখানে আমার আত্মীয়স্বজন বলতে কেউ নেই। খোরশেদ আলম পুলিশে চাকরি করার সুবাদে প্রভাব প্রতিপত্তি দেখিয়ে আমাকে নিজ বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে আমি ন্যায়বিচার পেতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক জহিরুল হকের অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে পুলিশ সদস্য মো. খোরশেদ আলম অভিযোগের বিষয়গুলো সত্য নয় বলে মোবাইল কল কেটে দেন।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি বদরুল হাসান বলেন, ‘এ ব্যাপারে শিক্ষকের স্ত্রী আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে থানায় এসে বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে বলে অভিযোগপত্র ফিরিয়ে দেয়ার কথাও বলেছেন। এরপরে কী হলো আমার জানা নেই।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৭/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়